শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ২৯ মার্চ ২০১৭:  21নরসিংদীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নদীর পানিতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ। মেঘনার শাখা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন বিলের পানিতে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন চাষিরা। এতে একদিকে যেমন উৎপাদিত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু মাছ, পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে অনেকের।
জেলা মৎস্য বিভাগ ও মাছচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নরসিংদী জেলাজুড়ে নদীর পানিতে ভাসমান খাচায় মাছ চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন মৎস্যচাষিরা। নদীর পানিতে লোহার পাইপ, বাঁশ, ড্রাম ও চারদিকে জাল দিয়ে তৈরি করা হয় এই ভাসমান খাঁচা। পুকুর তৈরি ও ভূমি ব্যবহারের খরচ বাঁচিয়ে নরসিংদীর মেঘনার শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন বিলের পানিতে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন চাষিরা।
নরসিংদী জেলা মৎস্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলায় সাড়ে ৮০০ খাচায় মাছ চাষ করা হয়। মৎস্যচাষিদের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় দেড় সহ¯্রাধিক খাঁচায় মাছ চাষ হচ্ছে। তুলনামূলক খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় এই পদ্ধতিতে তেলাপিয়া, পাবদা, পাঙ্গাস, রুইসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ করা যায়।
পুকুরে চাষ করা মাছের চেয়ে স্বাদ ভালো হওয়ায় এই পদ্ধতিতে চাষ করা মাছের চাহিদা রয়েছে বাজারে। সরাসরি খাঁচা থেকেই এসব মাছ কিনে নিয়ে যান পাইকাররা। অল্পদিনেই লাভজনক হওয়ায় এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন চাষিরা।
এ পদ্ধতিতে প্রবহমান পানিতে মাছ চাষের ফলে জলাশয়ের সঠিক ব্যবহার সুনিশ্চিত হচ্ছে। তবে শিল্প-কারখানার বর্জ্যে মেঘনা নদীর পানি দূষণ, মাছের খাবারের মূল্যবৃদ্ধি ও পুঁজির অভাব এই পদ্ধতিতে মাছ চাষের কিছুটা সমস্যা হয় বলে জানান চাষিরা।
মেঘনা নদীতে খাঁচায় মৎস্যচাষি সুরুজ মিয়া বলেন, পুকুরের তুলনায় খাঁচায় মাছ চাষ অনেকটা লাভজনক। মাছের স্বাদ থাকা ও দুুর্গন্ধহীন হওয়ার কারণে বাজারে এসব মাছের চাহিদাও বেশি। সরাসরি খাঁচা থেকেই মাছ বিক্রি করা যায়।
একই এলাকার অপর মৎস্যচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করে খাঁচায় তেলাপিয়া মাছ চাষ করেছি। প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ করতে পারি। তবে শিল্পবর্জ্যে মাছ চাষে ব্যাঘাত ঘটছে বলেও জানান তিনি।
নরসিংদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তোফাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খাঁচায় মাছ চাষ বৃদ্ধি করে চাহিদা পূরণের জন্য মৎস্যচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৫ সালে জেলায় এ পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করা হয়েছে সাড়ে ৩০০ মেট্রিক টন এবং ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৪০০ মেট্রিক টন। তবে চাষিদের সহজশর্তে ঋণ সহায়তা দেওয়া গেলে নদ-নদীর প্রবহমান পানি কাজে লাগিয়ে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে রূপালি বিপ্লব ঘটানো সম্ভব বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।