কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা লিটন মিয়া ফুলকপি প্রতিটি ৪০ টাকা আর বাঁধাকপি প্রতিটি ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাঁর তথ্যমতে, পাবনার ঈশ্বরদী থেকে এসব সবজি বেশি আসছে। তিনি জানান, ওই সব এলাকায় বিশেষভাবে পলিথিন দিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করে ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষ হচ্ছে। তাই শীতের সবজি হওয়ার পরও এসব সবজি পাওয়া যাচ্ছে সারা বছর।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এম এ রহিম প্রথম আলোকে বলেন, কৃষিবিদদের সফলতার কারণে এখন তাপসহিষ্ণু সবজি চাষ হচ্ছে। এ জন্য শীতের সবজি সারা বছরই পাওয়া যায়। শুধু তা-ই নয়, সব ধরনের সবজিই সারা বছর পাওয়া যায়। তিনি জানান, সারা বছর সব সবজি পাওয়া কৃষিক্ষেত্রে একটি বিশাল ইতিবাচক দিক। এতে হয়তো স্বাদ একই রকম থাকে না, কিন্তু সবজি তো পাওয়া যায়। এটা অনেক বড় সফলতা। এ ছাড়া বিক্রেতারা ভালো দাম পাওয়ায় সারা বছরই সব ধরনের সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
বৃষ্টিতে বেড়েছে সবজির দাম: গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে সবজির দাম। বিক্রেতারা সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বৃষ্টিকেই দায়ী করছেন।
সবজির বড় আড়ত কারওয়ান বাজারে সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বর্ষার সবজি হিসেবে পরিচিত কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। চিচিঙ্গা ও ঝিঙে ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা মো. আকতার বলেন, চারদিকে এখন বন্যার পানি, অনেক খেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সবজি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে সবকিছুর দামই বাড়তি।
আরেক বিক্রেতা ফরহাদও অতিবৃষ্টিকে সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। বাইরে থেকে সবজি কম আহে, কিনতে গিয়া দামও বেশি পড়ে। হের লাইগ্যা বাজারে দাম একটু চড়া।’ বন্যা কমলে দাম কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
ধানমন্ডির বাসিন্দা আবদুল মোতালেবের সঙ্গে কথা হয় কাঁঠালবাগান বাজারে। তিনি বলেন, সব সবজির দাম প্রতি কেজিতে ৪০ টাকার বেশি। কিছু সবজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। তাই তিনি সবজি কিছুটা কম করে কিনছেন। দাম কমলে তখন বেশি করে কিনবেন।
কিছু সবজির ক্ষেত্রে দেখা গেল কারওয়ান বাজারেই দাম বেশি। যেমন কারওয়ান বাজারে যে কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, হাতিরপুলে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা আরমান শেখ। তিনি বলেন, ‘এই পাইকারি বাজারেই যদি অন্য বাজার থেকে দাম বেশি হয়, তাহলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষ যাবে কোথায়?’ তিনি দাম ঠিক রাখার জন্য সরকারি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানালেন।