বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’র নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব

খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ঃ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সংগঠক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের নামে চট্টগ্রামে গড়ে তোলা ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’র নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে মন্ত্রিসভায়।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে চট্টগ্রামে গড়ে তোলা ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে’ সংস্কারের প্রস্তাব দেন এক উপমন্ত্রী। তিনি ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’-এর স্থলে ‘চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ স্থাপনের প্রস্তাব দিলে মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যটি জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী নদী পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত সেক্টরের কমান্ডার প্রয়াত জিয়াউর রহমানের নামে গড়ে তোলা ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে’ চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাব করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। জাদুঘরটির অবস্থান চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার কাজির দেউড়ি এলাকায়। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে নওফেলের এই প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্য। প্রস্তাবে নীতিগত সমর্থন এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে নওফেল এই প্রস্তাব রাখার পর এতে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং প্রমুখ।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, যে ভবনটিকে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর বানানো হয়েছে, সেটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃৃৃৃতিবিজড়িত ভবনটি। এক সময় এটি সার্কিট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালে অনেক নিরীহ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানি সেনারা ধরে নিয়ে ওই ভবনে রেখে নির্যাতন করেছিল। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তখন এই সার্কিট হাউসে এসে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯১ সালে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেটিকে আকস্মিকভাবে জিয়া স্মৃৃৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করেন, যা চট্টগ্রামবাসী এবং আপামর মুক্তিযোদ্ধারা মেনে নেননি। সেখানে জিয়াউর রহমানের কোনো স্মৃৃৃতি নেই। শুধু ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে যে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল, সেটি এনে সেখানে রাখা হয়েছে। অথচ জিয়াউর রহমানের আগে একই ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান। তা হলে শুধু জিয়াউর রহমানের নামে কেন জাদুঘর হবে? তিনি আরও বলেন, আদালতের রায়ে জিয়াউর রহমান একজন অবৈধ সামরিক শাসক। তার নামে কেন একটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনা এভাবে ব্যবহার করা হবে? তা ছাড়া জিয়ার নামে স্থাপনা হওয়ায়, এই দর্শনীয় স্থানটিতে চট্টগ্রামের মানুষ যান না। অথচ এটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর করে একটি সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তর করলে এটি দেশের সম্পদে পরিণত হবে।