বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার, ০৫ মার্চ ২০১৯ঃসার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন-বিতর্ক। পাকিস্তান ভূখণ্ডে হামলা করতে গিয়ে দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত। পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন আটক। সবমিলে পুলওয়ামা ইস্যুতে ভারতের ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী।

এজন্যই দ্রুত আরেকটি ‘ভয়ঙ্কর হামলার’ ছক কষে ভারত। এতে পূর্ণ সহায়তা করবে দখলদার ইসরাইল। এবার রাজস্থান বিমান ঘাঁটি থেকে পাকিস্তানের ৬ থেকে ৭টি স্থানে একযোগে মিসাইল হামলার পরিকল্পনা করা হয়।

তবে, সময়মতো এবং সঠিক গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই হামলার পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে পাকিস্তান। কিভাবে ভারতের ভয়ঙ্কর এই হামলার পরিকল্পনা পাকিস্তান ব্যর্থ করে দিয়েছে, তা সোমবার পাক সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র সাংবাদিকদের কাছে প্রকাশ করেছে।

পাকিস্তানের ডন ও দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন খবর দিয়েছে, ইসরাইলের সহায়তায় ভারতের এই মিসাইল হামলার পরিকল্পনার কথা যথাসময়ে পাকিস্তান জানতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানের গোয়েন্দা দপ্তর ভারতের গোয়েন্দাদের সতর্ক করে দেয়।

একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি করে, পাকিস্তান যে কোনো ধরনের হামলার মোক্ষম জবাব দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। অস্তিত্বের প্রশ্নে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভারতীয় সংস্থাকে এও জানানো হয়, হামলার জবাবটা ভারতকে তিনগুণের বেশি ফেরত দেয়া হবে।

সূত্রের দাবি, হুঁশিয়ারি পেয়েই ভারত হামলার পরিকল্পনা থেকে পিছু হটে। এখন তারা জানিয়েছে, করাচি ও ভাওয়ালপুরের মতো বড় শহরের পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দমনে হামলা করবে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমেই সন্ত্রাসী দমন করা হবে।

পাক সরকারের ওই সূত্রের ভাষ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসলে দিবাস্বপ্ন দেখছেন। তিনি একদিকে মে মাসের নির্বাচন ঘিরে যুদ্ধের দামামা অব্যাহত রাখতে চাইছেন। অন্যদিকে মুখে খৈ ফোটাচ্ছেন তার হাতেই নিরাপদ দেশ।

‘ভয়ঙ্কর হামলার’ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে জানানো হয়, ইসরাইলের সহায়তা নিয়ে ভারত রাজস্থান বিমান ঘাঁটি থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে পাকিস্তানের ১০০ কিলোমিটার ভেতরে হামলা করবে। সময়মতো গোয়েন্দারা এই তথ্য জানতে পেরেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাকে দ্রুত কড়া বার্তা ফেরত দেয়।

ভারতীয় পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়ার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব পাক সরকার গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে দেয়।

যদিও এ বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য নিতে পারেনি ডন ও দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তান বিশ্বের ক্ষমতাধরদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, তারা ভারতের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্যই ভারতীয় পাইলটকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। দেশটি এ বিষয়ে ভারতেরও সম্মান প্রত্যাশা করে।

এরপরই বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা পাকিস্তান এবং ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যদিও কাশ্মীরে হামলা ইস্যুতে চিরবৈরি দুই রাষ্ট্র ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু, উভয় দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।

সূত্রের দাবি, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কিছুদিন আগেও উত্তেজনার পারদ চড়েছিল। উভয় দেশের সরকার, সশস্ত্র বাহিনী ও গোয়েন্দারা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। কিন্তু, পাইলট অভিনন্দনের মুক্তির একটি ইস্যুই গোটা পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। পাকিস্তানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগের দ্বার উন্মোচন হয়।

এরপরই যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও তুরস্ক পাক-ভারত উত্তেজনা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সর্বশেষ দু’দেশের চিরবৈরিতা কমাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া ও ব্রিটেন।

সূত্র জানায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পুলিশ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলায় ৪২ জওয়ান নিহত হয়। এরপর ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে যে ডসিয়ার সরবরাহ করা হয়েছে, তাতে দেশটি বাস্তবিক অর্থে তেমন প্রমাণ হাজির করতে পারেনি, যার ভিত্তিতে পাকিস্তান জইশ-এ মোহাম্মদের মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।

পাকিস্তান সরকার ২০১৮ সালে সিদ্ধান্ত নেয়, নিষিদ্ধ জইশ-এ মোহাম্মদের বড় সংখ্যক অনুসারিকে সমাজের মূলধারায় আসার সুযোগ করে দেবে। যারা আত্মসমর্পণ করবে তাদের হাজতে নিয়ে, পরে পুনর্বাসন করবে এবং সন্তানদের সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।