শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,শনিবার, ১৮মে ২০১৯ঃ মহাকাশ শব্দটি ভেবে চোখ বন্ধ করলেই বিশাল শূন্যতা দেখতে পাই। যে শূন্যতার কোন শেষ নেই। নানান রহস্য। কিন্তু একটা বিষয় সব সময়ই যেন পাশ কাটিয়ে যায়। সেটা হলো মহাকাশের তাপমাত্রার পরিমাপ। বিষয়টি নিয়ে নিরন্তন আলোচনা না হলেও পরিবর্তনশীল বিশ্বব্রাহ্মণ্ডে অন্য সব কিছুর মতোই তাপমাত্রাও বিবর্তনের (এক অবস্থান থেকে অন্য অবস্থানে যাওয়া বা স্তরান্তর হওয়া) পথে।

বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে বিশদ গবেষণা করে বিশ্লেষণ করেছেন। এখনও চলছে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা।

একটা বিশাল প্রশ্ন মাথায় আসে, কিভাবে মাপা হয় মহাকাশের তাপমাত্রা, কিভাবে এর পরিমাপ করা সম্ভব? মুহূর্তেই মাথায় আসে একটাই নাম থার্মোমিটার। এর সাহায্যেই না আমরা আমাদের দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ করি। অসুস্থ হলে, গায়ে জ্বর এলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়৷ জড় বস্তুর ক্ষেত্রে তার উপাদানের কণার গতির উপর তাপমাত্রা নির্ভর করে৷ যেমন পানি৷ পানির অণুর গতি অত্যন্ত কম হলে তা বরফে রূপান্তরিত হয়৷ গতি বেড়ে গেলে ঘূর্ণায়মান কণাগুলির মধ্যে সংঘাত ঘটে এবং উত্তাপ সৃষ্টি হয়৷

পানি তখন তরল হয়ে যায়৷ কণার গতি আরও বেড়ে গেলে পানি ফুটতে শুরু করে৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক বিকিরণকে থার্মোমিটার হিসেবে ব্যবহার করেন৷ সেগুলির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য যত কম, তার উৎসস্থান ততই উষ্ণ হয়৷

বিগ ব্যাং। এটা একটা আদি বিস্ফোরণ যা বেশ প্রচলিত এক সংজ্ঞা। এটা নাকি ১৪০০ কোটি বছর আগে বিশাল এক বিস্ফোরণের ফলে এ বিশাল মহাকাশের সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় অকল্পনীয় মাত্রার উত্তপ্ত এক গ্যাস। এ গ্যাস থেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ ও মহাজাগতিক বস্তুগুলির জন্ম হয়েছিল৷ সে সময়ে নানা রকম তাপমাত্রা সৃষ্টি হয়েছিল৷

আমাদের সূর্যের মতো নক্ষত্রের অত্যন্ত গতিশীল ও শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে৷ সেই সব ক্ষেত্র কণাগুলির গতি মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে৷ ফলে চারিপাশের পরিবেশের তাপমাত্রা কয়েক লক্ষ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলে৷ ব্ল্যাক হোলের তাপমাত্রা আরও বেশি৷ তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সব উপাদান ও কণা টেনে নিংড়ে নিয়ে বাষ্পে পরিণত করে৷

গ্যালাক্সি, নক্ষত্র ও গ্রহগুলির মাঝের অংশে প্রায় মাইনাস ২৭০ ডিগ্রি মাত্রার চরম শীতল তাপমাত্রা বিরাজ করে৷ সেখানে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক ও ধীর গতির কণা রয়েছে৷ ফলে সেগুলির মধ্যে সংঘাতের ঘটনাও বিরল৷ তাছাড়া বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্প্রসারিত হয়ে চলছে৷ এই সম্প্রসারণের ফলে কণাগুলির মধ্যে দূরত্বও বেড়ে চলেছে৷ দূরত্ব বাড়ার ফলে তাপমাত্রাও কমে চলেছে৷

ইউরোপের প্লাংক নামের স্যাটেলাইট কয়েক বছর আগে সেই শীতল তাপমাত্রা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পরিমাপ করেছে৷ মহাকাশে ভাসমান টেলিস্কোপের সাহায্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিকিরণ মাপতে ও তা পরীক্ষা করতে পারেন৷ বিকিরণের উৎস, তার ঘনত্ব মেপে তাঁরা উৎসের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারেন৷