শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, শুক্রবার২৪ মে,২০১৯ঃ ভারতের  সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ৪২-এ ৪২ করার ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের পর জোরালো ধাক্কা খেল ঘাসফুল শিবির। প্রায় অর্ধেক আসন পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল তৃণমূলকে। অপ্রত্যাশিতভাবে ১৮টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি।

কী কারণে এমন বিপর্যয়? সকাল থেকে নানা মুনির নানা মত। অনেকেই বলছেন, রাজ্যে মেরুকরণের লাভ ঘরে তুলেছে গেরুয়া শিবির। পরাজয়ের প্রাথমিক ময়নাতদন্ত করেছে তৃণমূলও। কী মনে করছে ঘাসফুল শিবির?

তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, প্রথমত, রাজ্যে ব্যাপক মেরুকরণ রয়েছে। সেই মেরুকরণের ফায়দা তুলেছে বিজেপি। ২০১৪ সালে ১৭ শতাংশ ভোট ছিল বিজেপি। বামেদের ছিল ২৭ শতাংশ। বাম ভোটের কার্যত পুরোটাই চলে গিয়েছে রামে।

দ্বিতীয়ত, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার জেরে জনমত প্রতিফলিত হয়নি বলে মনে করছে তৃণমূল। আর সে কারণে দলের বাস্তব অবস্থা ঠাওর করা যায়নি। মানুষ ভোট দিতে না পারার শোধ তুলেছে লোকসভা ভোটে।

তৃতীয়ত, স্থানীয় নেতাদের গোষ্ঠীকোন্দলও দলতে ভুগিয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে বহু এলাকায় এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। এর পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যর্থতার কারণে বিজেপির উত্থানের রিপোর্টও ঠিকমতো আসেনি উপরতলায়।

চতুর্থ, কমবয়সী যুবকদের হাতে এখন দলের রাশ। আর সে কারণে অভিজ্ঞতার অভাব চোখে পড়েছে সংগঠনে। কম বয়সি নেতাদের ঔদ্ধত্য মেনে নিতে পারেননি মানুষ।

পঞ্চম, দল অতিরিক্ত প্রশাসন নির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের চোখে দল দেখছেন নেতারা। আর তাতে সংগঠনে একাধিক ফাঁকফোকর তৈরি হয়েছে। অনেকটা বিদায় বেলার বামফ্রন্টের মতো।

ষষ্ঠ, রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মোদী-শাহ। একাধিক সভা করেছেন। তার ফায়দা লুটেছে বিজেপি। মোদীর অতিবড় সমালোচকও স্বীকার করেন, ভূভারতে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে জনপ্রিয় নেতা আর কেউ নেই।

সপ্তম, তপশিলী জাতি-উপজাতি ও মতুয়াদের ভোট নিয়ে চলে গিয়েছে বিজেপি। যা চমকে দিয়েছে তৃণমূলকেও।

অষ্টম, পুরুলিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় আবাস যোজনা বা অন্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের থেকে কাটমানি নিয়েছেন তৃণমূল নেতারা। এতে বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন মানুষ।

লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর একটা জিনিস স্পষ্ট, বাংলায় বিজেপি আর প্রান্তিক শক্তি নেই। বরং শাসক দলের চ্যালেঞ্জার হিসেবে প্রবলভাবে উঠে এসেছে তারা।