বৃহঃ. এপ্রি ১৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার ২৪, বৃহস্পতিবার,২৫জুলাই,২০১৯ঃ বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ জনসভায় রূপ নেয়। প্রথমদিকে প্রচন্ড রোদ, ভ্যাপসা গরম ও পরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বেলা ১২টার পর থেকেই শহীদ হাদিস পার্কের সমাবেশস্থলে দলীয় নেতা, কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে হাজির হন। বিভিন্নস্থানের কৌশলী বাধাবিপত্তি উপেক্ষ্ াকরে দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বিএনপি নেতা-কর্মীদের গন্তব্য ছিল খুলনার সমাবেশে। খুলনা নগরীর প্রায় সব ক’টি রাস্তায় ছিল মানুষের ঢল। দলে দলে মানুষ যোগ দেন হাদিস পার্কে। স্লোগান ছিল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতেই হবে।
ভাষা আন্দোলনে শহীদ হাদিসের নামে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক এই পার্কটি বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামের কালের সাক্ষী। ঐতিহাসিক এই পার্কে টানা ২০বছর পর বিএনপি সমাবেশ করার সুযোগ পেল। এর মাঝে ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বরে খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রোডমার্চ কর্মসূচী শেষে জনসভা হয়। সেটি ছিল সর্বশেষ বিএনপির বিরাট জনসভা। এরপর কার্যত বড় জনসভা বা সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। দীর্ঘদিন পর বিশাল সমাবেশ ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে একটা বার্তা দিলো বিএনপি।
সমাবেশস্থলে সাতক্ষীরার বিএনপি কর্মী আব্দুল আজিজ সহপাঠীসহ এসেছিলেন সমাবেশে। তার কথা, দলের বর্তমান অবস্থা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি কী তা জানার জন্য সমাবেশে এসেছিলাম। মনে হলো নেতা-কর্মীদের ভয়-ভীতি অনেকটাই কেটে গেছে। যশোরের চুড়ামনকাঠির যুবদলের দেলোয়ার হোসেন বললেন, সমাবেশ রূপ নিয়েছে জনসভায়।
বিভাগীয় এই সমাবেশের সরব উপস্থিতি প্রমাণ করে খুলনা ও যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন, শরীক এবং সমমনা দলগুলোর নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা বেশ নড়েচড়ে বসেছেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের চোখেমুখে আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা উচ্ছাসের ছাপ। কেন্দ্র থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে বড় কোন কর্মসূচী দিলে তারা অংশগ্রহণে প্রস্তত। এতদিন বেশীরভাগ সময় নেতা-কর্মীরা ছিলেন কার্যত ঝিমিয়ে। অনেকেই বললেন, এখন সবল ও সঠিক নেতৃত্ব পেলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যে কোন কর্মসূচী সফল করতে প্রস্তত আছেন।
বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার কয়েকজন নেতা-কর্মী জানালেন, আমাদের বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে আবেগতাড়িত হয়ে নয়, সত্যিকারর্থে দলকে শক্তিশালী করলে বুক ফুলিয়ে মাঠে নামা যাবে। তাদের কথা, পরিস্থিতি পরিবেশ বাধ্য করছে আমাদের সরব হতে। কারণ নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা, মামলা, প্রশাসনিক হয়রানী ও জেল-জুলুম হুলিয়ায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।
সমাবেশ শুরু পূর্বে বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বললেন, আমরা এখন জনমত গঠণ ও মানুষকে জাগানোর কাজটি করছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি। তিনি বললেন, আসলেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোসহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘মাদার অব ডেমোক্রেসী’ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভোট ডাকাতির সংসদ বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা করা, দুর্নীতি ও অপশাসনের অবসান এখন জনগণের সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সবার বিশ্বাস বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি।
এদিকে, সকালে ঢাকা থেকে বিমানে যশোর নেমে সড়কপথে খুলনা সমাবেশস্থলে আসেন প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। যশোর এয়ারপোর্টে মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান যশোরের নেতৃবৃন্দ। যশোর থেকে খুলনা আ্সার পথে নওয়াপাড়া প্রেমবাগে যানজটে বিএনপি মহাসচিবের গাড়ী বহর আটকা পড়ে আধাঘন্টা। পরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রচেষ্টায় যানজট ঠেলে মহাসচিবের গাড়ীর বহর পার করা হয়।