শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
যশোরে ডেঙ্গু রোগী শতাধিক, চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

খোলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট,২০১৯ঃ যশোর জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৫ জনে। এরমধ্যে ৫১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় কিট এনএস১ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।

যশোর জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বেড না পাওয়ায় ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দায় ঠাঁই নিয়েছে ডেঙ্গু রোগীরা। কোরবানি ঈদ ঘিরে রোগীর চাপ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকা থেকে এলাকায় আসতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জেলায় ১১৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৫১ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সঙ্গে অন্যান্য রোগীর চাপও বাড়ছে।

সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে। কিন্তু এনএস১ কিট সংকটে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাচ্ছে না। যশোর জেনারেল হাসপাতালের ল্যাব টেকনোলজিস্ট গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের এখানে এনএস১ কিট সংকট রয়েছে। সিভিল সার্জন অফিস থেকে ৪০টি কিট দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। জিজিএম, আইজিএম পরীক্ষা বিনামূল্যে করছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তাদের প্রতিনিধি যশোর হাসপাতাল থেকে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করছে। পরে মেডিকেল কলেজে করা হচ্ছে পরীক্ষা।’

এদিকে, সরকারি হাসপাতালের মতো বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকেও বাড়ছে রোগীর ভিড়। কিটসের দাম তিন-চারগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিড়ম্বনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার যশোরের ডেপুটি ম্যানেজার ও অ্যাডমিন ইনচার্জ মফিজুর রহমান তারেক বলেন, ‘রোগীর চাপ বৃদ্ধির সঙ্গে ডেঙ্গু পরীক্ষার উপকরণ কিট সংকট দেখা দিয়েছে। কিট আমদানিকারকরা তিন চারগুণ দাম বৃদ্ধি করেছে। সরকারের উচিত তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে উচ্চমূল্যে কিট কিনে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন হবে। অনেক ক্লিনিক ডেঙ্গু পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাদেরও বাধ্য হতে হবে।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কিটসের চাহিদা পাঠিয়েছিলাম। সেখানে সরবরাহ নেই। আমাদের স্টোর কিপার ফিরে এসেছে। তবে সিভিল সার্জন অফিস থেকে ৪০টি কিটস পেয়েছি। সেটি দিয়ে কাজ চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৭৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে ৫১ জন রোগী চিকিৎসাধীন। বাকিরা ছাড়পত্র নিয়ে ফিরে গেছে। প্রতিদিন রোগীর চাপে জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। ইচ্ছা করলেও ডেঙ্গু রোগী আলাদা রাখতে পারছি না। তবে আমরা ডেঙ্গু কর্নার করছি।’

ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীর বেশিরভাগ ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে অবস্থানরতদের কোরবানি ঈদে এলাকায় আসতে নিরুৎসাহিত করছি। এলাকায় ফিরলে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়বে।’

যশোরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. ইমদাদুল হক রাজু বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনটি মনিটরিং টিম গঠন, একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। জেলায় এই পর্যন্ত ১১৫ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।’