খােলাবাজার ২৪,রবিবার,০৪ আগস্ট ,২০১৯ঃ ডেঙ্গুর ভয়ে ঈদের ছুটি শুরুর আগেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী। যারা কাজের কারণে নিজে যেতে পারছেন না, তারা পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
রোববার কমলাপুর স্টেশনে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি ভিড়। বিকেল চারটা ৪০ মিনিটে জামালপুরগামী ‘যমুনা এপপ্রেস’ কানায় কানায় পূর্ণ যাত্রী নিয়ে স্টেশন ছাড়ে।
এর আগে কথা হয় ট্রেনটির আটজন যাত্রীর সঙ্গে। তাদের মধ্যে তিনজন জানান, ডেঙ্গুর ভয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। চিনি শিল্প করপোরেশনের চাকরি করেন আতিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ৮ আগস্ট পর্যন্ত তার অফিস খোলা। তাই তিনি নিজে যেতে পারছেন না। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তার ছেলে নুসাব ইসলামে বয়স আট। মোহাম্মদ প্রিপারেটরি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তার ক্লাসের অন্তত তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। ওই স্কুলের একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে।
আতিকুল ইসলাম জানান, ভয়ে ছেলেকে স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে তার বাসা। সেখানে মশার ব্যাপক উৎপাত। ছেলে এবং চার বছরের মেয়ে নুসাইবাকে নিয়ে ভয়ে আছেন। তাই সন্তানদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
একই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন পূর্ব রামপুরার বউ বাজারের বাসিন্দা আখলাক হোসেন। তিনি ফলের ব্যবসা করেন। ভারত থেকে ফল আমদানি করেন। তার এক সন্তান। ছেলের বয়স তিন বছর। রোববার মা, স্ত্রী ও ছেলেকে জামালপুরের গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
আগামী ১২ আগস্ট ঈদ উদযাপিত হবে। ৮ আগস্ট ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস। প্রতি বছর দেখা যায়, ছুটি শুরুর দু’একদিন আগে থেকে ভিড় বাড়ে ঈদযাত্রায়। এবার আগাম ভিড় বেড়েছে।
পরিবহন খাত সংশ্নিষ্টরা জানালেন, তারা নিশ্চিত নন কী কারণে ছুটির আগে যাত্রীর চাপ বেশি। তবে ডেঙ্গু একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করেন এনা পরিবহনের মহাখালী কাউন্টার ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের।
ডেঙ্গু আতঙ্ক রয়েছে রাজধানীর টার্মিনালগুলোতেও। টার্মিনালগুলোতে বাস ধোয়া মোছার কাজ চলে প্রতিদিন। এ কারণে পানি জমে থাকে। তা থেকে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এতে গাবতলীতে বেশ কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি ঢাকা জিলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য নুর মোস্তফার।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরাও সোমবার থেকে মাঠে নামবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক সামদানী খন্দকার। রোববার সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মঙ্গলবার থেকে দূরপাল্লার বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়ার আগে মশার ওষুধ স্প্রে করা হবে। টার্মিনালে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করা হবে। টার্মিনাল পরিষ্কার করবেন শ্রমিকরা।