খােলাবাজার ২৪, রবিবার,১৮আগস্ট ,২০১৯ঃ ‘ভাইয়ের’ স্লোগানে উৎসবে নয়াপল্টন। বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ষষ্ঠ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচনের জন্য দ্বিতীয় দিনে প্রার্থীরা মিছিল নিয়ে ফরম তুলতে আসছেন। এ সময় অনুসারীরা সবাই যার যার ভাইয়ের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন।রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ফরম বিতরণ চলবে। বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে খ্যাত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে ১৪ সেপ্টেম্বর।
কাউন্সিল উপলক্ষে শনিবার থেকে নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
ছাত্রদল সভাপতি পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পরে সদ্য বিলুপ্ত ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের বৃত্তি ছাত্রকল্যাণ বিষয় সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে ও গণতান্ত্রিক পন্থায় ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য ষষ্ঠ কাউন্সিলের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন আমরা ছাত্রদলের সকল নেতাকর্মী তাকে সাধুবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ছাত্রদলের কাউন্সিল পরিচালনার জন্য যে সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা কোনো বলয়ের প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন এবং ছাত্রদলের তৃণমূলের কাউন্সিলর নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে সক্ষম হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি প্রার্থী আল মেহেদী তালুকদার বলেন, আসন্ন কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদল ত্যাগী নেতৃত্ব খুঁজে পাবে। যে নেতৃত্বের কাজ হবে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুনরায় সুষ্ঠ ছাত্র রাজনীতি চালু করা এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সম্পাদক ও ষষ্ঠ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ছাত্রদলকে শক্তিশালী করার জন্য যে কাউন্সিলের ব্যবস্থা করেছেন আমরা তাকে স্বাগতম জানাই। আমি বিশ্বাস করি ১৪ তারিখের কাউন্সিলের মাধ্যমে ছাত্রদল তার যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে সক্ষম হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ষষ্ঠ কাউন্সিল সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী শাহ নেওয়াজ বলেন, ষষ্ঠ কাউন্সিলের কাউন্সিলররা যদি ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করে তবে সরকার তার ছাত্রলীগ নামক সংগঠন দিয়ে সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখলদারিত্ব মুক্ত করে স্বাভাবিক শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সম্পাদক তানজিল হাসান বলেন, এবারের কাউন্সিল নিয়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যে পরিমাণে ছাত্রদলের নেতারা সরব হয়েছেন। তা অতীতের চাইতে বেশ লক্ষণীয়।
তিনি বলেন, এবার তারেক জিয়ার সঠিক সিদ্ধান্তের জন্যই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দলের সবাই আস্থা রাখছেন আমাদের অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর। তিনি অবশ্যই সুন্দর একটা কমিটি উপহার দেবেন।
দ্বিতীয় দিন মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যখন একাত্তর সালের অর্জিত অধিকার ভূলুণ্ঠিত, যে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় অবিচারে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে, আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বাংলাদেশ মানুষ যাকে মনে করেন সেই নির্যাতিত নেতা তারেক রহমান স্বাচ্ছন্দে বাংলাদেশে থাকতে পারছেন না, হাজার হাজার নেতাকর্মী হয় জেলে না হয় গুমের মধ্যে মৃত্যুর মুখোমুখি, প্রায় ২৬ লক্ষ মামলা নিয়ে যখন নেতাকর্মীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, যে দেশে কৃষক ও শ্রমিক তার ঘামের ন্যায্যমূল্য পায় না, যে দেশে কুরবানির চামড়া রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়, যে দেশের নারী তার মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারে না- ঠিক এমনই এক মুহূর্তে ছাত্রদল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন সম্ভাবনাময় দিন সৃষ্টির লক্ষ্যে নির্বাচন করছে।
এই কর্মসূচির মধ্য দিয়েই এদেশে স্বৈরাচার পতনের যে দৃষ্টান্ত ছাত্রদল অতীতে রেখেছেন সেই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আগামী দিনেও তারা উড়াবেন।
পুনঃতফসিল অনুযায়ী ১৯ ও ২০ আগস্ট মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে। ৩১ আগস্ট প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২২-২৬ আগস্ট যাচাই-বাছাই শেষে ২ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১৫ জুলাই ছাত্রদলের কাউন্সিলের ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বয়সসীমা নিয়ে সংগঠনের একটি অংশের টানা আন্দোলনের কারণে কাউন্সিল হয়নি।