শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,বুধবার,৪সেপ্টেম্বর,২০১৯ঃ বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের বয়স ১৮ ছাড়িয়ে গেলেও সেখানে আফগানিস্তান মাত্র টেস্ট ক্রিকেটে পা রেখেছে। তবে দু্ই দলের এটাই  প্রথম ম্যাচ। এদিক থেকে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া আফগানিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যকার ম্যাচটি হয়ে থাকবে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ হয়ে।

টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখার পর এটা্ দু’দলের প্রথম মুখোমুখি হওয়া। তাই এই টেস্টে ম্যাচে ভালো ফলাফল করে স্মরণীয় রাখারও মিশন দু’দলের সামনে। মূল মায়দানে নামার আগে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে ইতোমধ্যে ৩ দিনের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের তাতিয়ে নিয়েছে আফগানরা। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ নৈপুণ্যও দেখিয়েছে নবী-রশিদরা।

তবে প্রস্তু ম্যাচ আর মূল ময়দানে নামার মধ্যে পার্থক্যও রয়েছে। আফগানিস্তান নতুন দল হলেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একটি দল। তাদের বোলিং আক্রমণ অনেক শক্তিশালী। তবে ব্যাটিংয়ে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে তাদের। অভিজ্ঞতা নেই বেশ। কয়েকজন সিনিয়র ব্যাটসম্যান- আসগর আফগান, হাশমতউল্লাহ, মোহাম্মদ নবীরা থাকলেও টেস্ট কেলার অভিজ্ঞতা ২-৩ ম্যাচ করে। তাদের উপর নির্ভর করছে আফগান ব্যাটিং অর্ডার।

সেক্ষেত্রে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ আফগানদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালকে ছাড়া মাঠে নামছে বাংলাদেশ। কিন্তু তামিম ছাড়াও টাইগারদের ব্যাটিং অর্ডার রয়েছে ভালো কয়েকজন ব্যাটসম্যান। যার অভিজ্ঞতা দিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের করে রাখার ক্ষমতা রাখে। তরুণ সাদমান হোসেন, অভিজ্ঞ মুমিনুল, ট্রাম্পকার্ড সাকিব, অভিজ্ঞ মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর মতো তারকা ক্রিকেটাররা রয়েছেন। যারা বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা রাখেন।

বোলিং আক্রমণে আফগানিস্তান স্পিন বিভাগে বাংলাদেশে থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে। প্রস্তুতি ম্যাচে থেকে সেটা প্রমাণও পাওয়া গেছে।

দুই দলের বোলার দ্বারা শিকার হলো ১৭ উইকেট। এর মধ্যে স্পিনাররা দখলে করেছে ১২ উইকেট। পেসারদের দখলে বাকি পাঁচটি। এই চিত্রেই দেখা যায় চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট কেমন হবে। প্রস্তুতি ম্যাচে স্পিনাররাই সুবিধাভোগ করেছে। মূল ম্যাচেও সেটাই ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

আফগানিস্তান-বাংলাদেশের একমাত্র টেস্টে যদি স্পিন সহায়ক হয়, সেক্ষেত্রে স্পিন উইকেটে বেশি সুবিধা পাবে কোন দল?

প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের হয়ে অপস্পিনার আল আমিন ২.৮৩ ইকোনোমি রান রেটে ৪টি উইকেট শিকার করেন।

অন্য দিকে আফগান স্পিনাররা ছিলেন বিসিবির স্পিন থেকে অনেক এগিয়ে। বিসিবি একাদশের প্রথম ইনিংসে ১০ উইকেটের মধ্যে আফগান চায়নাম্যান স্পিনার জহির খান ২.০৯ ইকোনোমি রান রেটে  ৫টি ও লেগ স্পিনার রশিদ খান ৩.২৫ ইকোনোমি রান রেটে নেন দুটি উইকেট। ১০ উইকেটের ৮টি নেন স্পিনাররা।

আফগান মূল দল আর বিসিবি স্পিনারদের মধ্যে যোজন-বিয়োজন করা কিছুটা সমুচিত পর্যায়ে পড়ছে না। কারণ, বিসিবি একাদশ তো আর একমাত্র টেস্টে আফগানদের মোকাবেলা করবে না। সেখানে হয়তো সাকিব, মিরাজ, তাইজুলরা থাকবে। ফলও হয়তো ভিন্ন হবে।

তবে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে এটাই উপলদ্ধি হয়, দু’দলের একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি স্পিনারদের যুদ্ধের ম্যাচ। যে দলের স্পিন অ্যাটক যত ধারালো হবে। তারাই এগিয়ে থাকবে।

রশিদ, নবী, জহির এ তিনজনই আফগানদের মূল বোলার। তাদের মোবেলা করাই টাইগার ব্যাটসম্যানদের বড় পরীক্ষা। যদিও আফগানদের টেস্ট খেলার ইতিহাস বেশি দিনের নয়। নতুন একটি দল টেস্ট ক্রিকেটে। তবে তাদের স্পিন অ্যাটাক অনেক শক্তিশালী।

এর মধ্যে রশিদ খান ইতোমধ্যে নিজের সামর্থে্যর প্রমাণও দিয়েছেন বিশ্বজুড়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্পিন ভেল্কি দেখিয়ে বোলারদের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছেন। দুটি টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ার তার। দুই টেস্টে নিয়েছেন ৯ উইকেট। মোহাম্মদ নবীও সমানসংখ্যক টেস্ট ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

চায়নাম্যান স্পিনার জহির খানের এখনো টেস্ট ক্যারিয়ারে অভিষেকই হয়নি। তবে সে হতে পারে এই সিরিজের আফগান ট্রাম্পকার্ড।

বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামবে সাকিব আল হাসানের দল। সেই ম্যাচে রশিদদের নিয়ে ভাবতেই হবে তাদের। নয় তো টেস্টে নবাগত দলটি বিপদে ফেলে দিতে পারে টাইগারদের।

তবে স্পিনে বিভাগে আফগানদের চেয়ে বাংলাদেশও কম যায় না। বাংলাদেশের রয়েছে একজন টেস্ট স্পেশালিস্ট অপস্পিন বোলার- তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে পড়তে পারে আফগানরা। সাকিব আল হাসান রয়েছেন নিয়মি পারফর্মার। মেহেদি হাসান মিরাজ এবং নাঈম হাসানদের ঘেরা স্পিন অ্যাটাক। পেসারদের মধ্যে বাংলাদেশের আবু জায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ ও এবাদতরা রয়েছেন।

এদিক থেকে আফগান পেসা আক্রমণে থাকছেন শাপুর জাদরান ও সায়েদ সিরজাদরা।

তবে পেস বান্ধব উইকেটের কথা বলা হলেও মূল লড়াইটা হবে হয়তো দু’দলের প্রধান অস্ত্র স্পিনারদের মধ্যে।

দু’দলের যোজন ব্যাটিং এবং পেস আক্রমণে আফগান থেকেেএগিয়ে থেকেই মাঠে নামবে টাইগাররা। অন্য দিকে স্পিনের তাণ্ডবে আফগানরা কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারে।