শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

42খোলা বাজার২৪ : শুক্রবার, ২৮ আগস্ট ২০১৫

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ার পরও এর দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, অর্থনীতির সূত্র বা গ্রহণযোগ কোন যুক্তি কোনটাই এখানে বিবেচনা করা হয়নি।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ বাড়তি দাম কার্যকর হবে। এবার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ (৫০ ইউনিটের নিচে) ব্যবহারকারী বা লাইফলাইন গ্রাহক এবং সেচ ও সার কারখানায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। তবে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম আগের মতোই এবারও বেশি রাখা হয়েছে। ফলে গ্রাম ও শহরের দরিদ্র গ্রাহকদের মধ্যে বৈষম্য রয়েই গেছে। পাশাপাশি গড়ে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগে ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে সব গ্রাহক শ্রেণির গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। আর গত পাঁচ বছরে পাইকারি ও ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ছয়বার করে।

নতুন করে দাম বাড়ানোর ফলে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ। তিনি বলেন, এটা সরকারের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। অর্থনীতিতে যা বিরূপ প্রভাব ফেলবে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম অস্বাভাবিক কমে আসলেও সরকার পেট্রোবাংলার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার কথা বলে দাম কমায়নি। উল্টো তেলনির্ভর পণ্য বিদ্যুতের দাম আরও বাড়িয়ে দিলো। এখানে অর্থনীতির কোন সূত্র বা যুক্তি কাজ করেনি। এর ফলে সাধারণ ভোক্তা বিশেষ করে দেশের সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত শ্রেণি খুবই কষ্টের মধ্য পড়বে বলে মনে করেন তিনি।

তবে, কমিশন চেয়ারম্যান এ আর খান ব্রিফিংকালে দাবি করেন, গ্রাহকদের স্বার্থেই তারা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দাম না বাড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘিœত হবে, যা গ্রাহক স্বার্থের অনুকূল হবে না। বেতন ও আয় বৃদ্ধির ফলে ভোক্তাকে বাড়তি দাম দিতে হবে। কমিশন চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, তার এমন বক্তব্য বাড়াবাড়ি কথা। বাজার অর্থনীতিতে দর নির্ধারণ হয় বিশ্ব বাজার পরিস্থিতি দেখে। বিশেষ করে এসব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে। অনেকদিন ধরেই তেলে দাম কমছে, তাতে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমে গেছে। এ অবস্থায় দাম না কমিয়ে বাড়ানো হলো, যা গ্রাহক স্বার্থের অনুকূলে নয়।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায়, সরাসরি আমদানি করা তেলে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১০ টাকার মধ্যে। আর দেশে দাম না কমানোয় সরকার নির্ধারিত দামে বিপিসির তেলে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১৬ থেকে ১৭ টাকা। সরকার তেলের দাম সমন্বয় করলে তেলভিত্তিক বিদ্যুতের পুরোটাই প্রতি ইউনিট ১০টাকা দাম পাওয়া যেত। দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *