খোলাবাজার ঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ ১ সেপ্টেম্বর। ১৯৭৮ সালের এই দিনে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও ইসলামি মূল্যবোধকে সামনে রেখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল গঠন করেন।
উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্লোগানকে ধারণ করে ১৯ দফা কর্মসূচি নিয়ে পথচলা শুরু করে বিএনপি। তবে প্রতিষ্ঠার পাঁচ মাসের মাথায় ১৯৭৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ২০০টি আসন লাভ করে।
দীর্ঘ ৩৬ বছরে সংঘাত-বিক্ষোভ, চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দলটি একাধিবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে বিএনপি। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে দলটি।
প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময় বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও বার বার ঘুরে দাঁড়ায় বিএনপি। কিন্তু এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ে মুখোমুখি হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ রাজনৈতিক দলটি। কারণ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে টানা দুইবার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন অনেকটাই বেসামাল বা টালমাটাল। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দলটির নেতা-কর্মীরা মামলায় বিপর্যস্ত। চলমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না তারা। ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতিষ্ঠিত এ দলটিকে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সামরিক শাসক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন দলের প্রথম চেয়ারম্যান।এর আগে, ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তার পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে একটি ডানপন্থী দল গঠিত হয়। পরে তা বিলুপ্ত করে বিএনপি করা হয়।
এদিকে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।সকাল ১০টায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।একইদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অডিটরিয়মে বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে দেয়া এক বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র বিপন্ন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে। ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশজুড়ে গণহত্যা, গুম, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মহোৎসব চলছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া মৌলিক-মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন এখন জরুরি।
(খোলাবাজার/জিএম/৩১-০৮-২০১৫)