খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫, ডিমলা, নীলফামারী : মনোয়ার হোসেন নামের দুই বছরের এক শিশুর পানিতে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার দুপুরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ওপারে উত্তর খড়িবাড়ি চরের এই ঘটনায় রাত সারে ৯টা পর্যন্ত শিশুটির লাশের দাফন সম্ভব হয়নি। শিশুটির পিতা মৃত্যুটিকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসাবে অখ্যায়িত করেছে। অপর দিকে শিশুটির মা একই অভিযোগ তুলেছে তার বিচ্ছেদ হওয়া স্বামীর বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, ওই চরের রহিম বাদশার মেয়ে মনি বেগমের সাথে একই এলাকার মৃত মালেক বেপারীর ছেলে খয়বর আলীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একমাত্র পুত্র সন্তান ছিল মনোয়ার হোসেন। সম্প্রতি পারিবারিক কলহে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলেও একমাত্র সন্তান পিতা না মাতার কাছে থাকবে তা নিয়ে দ্বন্দ শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে ডিমলা থানা পুলিশের মাধ্যমে সন্তানটিকে তার মায়ের হেফাজতে দেয়া হয়। সেই থেকে সন্তানটিকে নিয়ে মনি বেগম তার পিতা রহিম বাদশার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। এ অবস্থায় শনিবার ১০ অক্টোবর সকাল ১১টায় শিশু মনোয়ার হোসেন নিখোঁজ হয়। শিশুটিকে তার মা ও নানা বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীনকে অবগত করেন। এর ফাঁকে দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটির লাশ ওই চরের একটি ডোবায় ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। লাশ উদ্ধার করা হয় সেখান থেকে। বিষয়টি প্রথমে স্বাভাবিক অবস্থায় তিস্তা নদীর পানির ডোবায় পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকার সকলেই একমত হয়। বিষয়টি শিশুটির পিতা খয়বর আলীকে জানানো হলে সে তার সন্তান কে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ তুলে বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রীর বিরুদ্ধে। চিরদিনের জন্য সন্তান হারিয়ে পাগল প্রায় শিশুটির মা মনি বেগম আঁতকে উঠেন। এক পর্যায় মনি বেগম অভিযোগ তুলে বলেন মুল ঘটনা তাহলে তার বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী ঘটিয়ে এখন তার উপর চাঁপানোর চেষ্টা করছে। তাই তিনিও এ ঘটনার জন্য শিশুটির পিতাকে দায়ি করে অভিযোগ তুলেন। ফলে সৃষ্টি হয় রহস্যের । ফলে লাশ দাফনে জটিলতা দেখা দিলে বিষয়টি এলাকার প্রভাবশালী সহ এলাকাবাসী সমাধানের চেষ্টা চালালেও রাত আটটা পর্যন্ত এর সুরাহ না হওয়ায় লাশ দাফন সম্পন্ন হয়নি।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন যতদুর শুনেছি শিশুটি পানিতে ডুবে মারা গেছে। এখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়ার কারনে বিরোধের জের ধরে হয়তো দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে। তাই বিষয়টি জটিল আকার ধারন করায় তা ডিমলা থানায় অবগত করা হয়েছে। ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমীন খান জানান, শিশুটির মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজাল তৈরী হওয়ায়। সঠিক রহস্য উদঘাটনের জন্য (রবিবার)১১ই অক্টোবর শিশুটির লাশ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে ডিমলা থানায় ইউডি মামলা নং ২৩,তারিখ-১০.১১.২০১৫ ইং রুজু করা হয়েছে।