খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫:ওয়াশিংটন, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে মুসলিমদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছেন।
সাউথ ক্যারোলিনায় সোমবার নির্বাচনী প্রচারণাকালে তিনি বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন।
প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে আসছেন। গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ায় মুসলিম দম্পতির হত্যাযজ্ঞের পর তিনি সর্বশেষ বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন।
তবে তার সহযোগীরা স্পষ্ট করেননি প্রস্তাবটি পর্যটক ও অভিবাসী উভয়ের ওপরই প্রযোজ্য হবে কি-না কিংবা তারা এও বলেননি, বর্তমানে বিদেশে থাকা আমেরিকান মুসলিমরাও এর আওতাভুক্ত হবেন কি-না।
পঞ্চাশ মিনিটের বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, আমাদের আর কোন উপায় নেই। কারণ ইসলামী জঙ্গিরা আমেরিকানদের হত্যা করতে চায়। তিনি বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে খারাপই হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, আমরা আবারও সে ধরণের হামলারই শিকার হতে যাচ্ছি।
ট্রাম্প আরো বলেন, আমেরিকানদের প্রতি মুসলিমদের ঘৃণা দিন দিনই বাড়ছে। এই ঘৃণার উৎস কি তা আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। কারণ আমাদের জনগণ ঐ সমস্ত লোক দ্বারা আক্রমণের শিকার হতে পারে না, যারা কেবল জিহাদে বিশ্বাসী এবং মানব জীবনের প্রতি যাদের কোন শ্রদ্ধাবোধ নেই।
এদিকে ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার নিজ পক্ষ ও প্রতিপক্ষ উভয় দিক থেকেই তীব্র সমালোচিত হয়েছে।
হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য মার্কিন মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক শীর্ষ সহযোগী বেন রোডস বলেছেন, আমাদের সংবিধানে ধর্মের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলা হয়েছে।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পের বক্তব্যকে নিন্দনীয়, পক্ষপাতদুষ্ট ও বিভেদ সৃষ্টিকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের বক্তব্য আমাদের জীবনকে আরো নিরাপত্তাহীন করে তুলবে।
এমনকি রিপাবলিকান দলভুক্ত ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশ টুইটার বার্তায় ট্রাম্পকে বিকৃত মস্তিষ্ক উল্লেখ করে বলেন, তার এই প্রস্তাব যথাযথ নয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বৃহত্তম মুসলিম নাগরিক অধিকার ও পরামর্শক সংস্থা দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স বলেছে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য খুবই দুঃখজনক ।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক নিহাদ আয়াজ বলেন, এটি সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অ-আমেরিকান বক্তব্য।