খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫: বিপিএলের পর ছুটি কাটানোর ধুম পড়েছে ক্রিকেটারদের। অবসরে অনেকে ঘুরে আসছেন দেশের বাইরে থেকে। অনেকে দেশেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াচ্ছেন। কাল রাতে রুবেল হোসেনও গেছেন বাগেরহাটে। তবে উদ্দেশ্য ভিন্ন। চিকিৎসকদের পরামর্শে এক মাসের ‘পূর্ণ বিশ্রাম’ নিতেই তাঁর বাড়ি যাওয়া।
গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে চোটের সঙ্গে লড়াই চলছে রুবেলের। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ‘এ’ দলের চার দিনের ম্যাচে ২ ওভার ৫ বল করে চোট পান বাঁ পায়ের পেশিতে। সফর অসমাপ্ত রেখে ফিরে আসতে হয় দেশে। মাঝে সিলেট সুপারস্টারসের হয়ে বিপিএলে ছয়টি ম্যাচ খেললেও এই পেসার আসলে পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না তখনো। বিপিএলের পর ফিটনেস ট্রেনিং করতে গিয়ে পায়ের বেশির ব্যথাটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আবারও।
২১ ডিসেম্বর আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করানো হয় রুবেলের বাঁ পায়ে। শঙ্কাটাই সত্যি! চোট পাওয়ার প্রায় তিন মাস পরও ছিঁড়ে যাওয়া মাংসপেশি পুরোপুরি জোড়া লাগেনি। অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে বিসিবির ফিজিও-চিকিৎসকেরা এবার তাই এক মাসের পূর্ণ বিশ্রাম দিয়েছেন রুবেলকে। জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম কাল জানালেন, ‘ছিঁড়ে যাওয়া পেশি জোড়া লাগাতে হলে আগামী চার থেকে ছয় সপ্তাহ পায়ের ওপর হাঁটা ছাড়া আর কোনো ভর দিতে পারবে না ও। দৌড়ানো, জগিং কিছুই করতে পারবে না। তবে শরীরের ওপরের অংশের ব্যায়ামগুলো করতে পারবে।’ শুধু চোট সারলেই অবশ্য চলবে না; এরপর পুনর্বাসন, ফিটনেস এবং অনুশীলনেরও ব্যাপারও আছে। সব মিলিয়ে রুবেলের মাঠে ফিরতে অন্তত দুই থেকে আড়াই মাস লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ ব্যস্ত সময় আসছে বাংলাদেশ দলের জন্য। এই সময়েই কিনা লম্বা বিরতিতে চলে যেতে হচ্ছে! রুবেলের জন্য এটা দুর্ভাগ্য। বাগেরহাটের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে কাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে বলছিলেন, ‘আমার দুর্ভাগ্যৃএটাকে মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই! আমার এখন একটাই চ্যালেঞ্জ—সুস্থ হয়ে মাঠে ফেরা। কী কী টুর্নামেন্ট আসছে, কী কী খেলতে পারব না, সেগুলো নিয়ে ভাবছি না। চোট নিয়ে খেললে তো আরও বড় ক্ষতি হবে।’
কে জানে, বিপিএল এরই মধ্যে সেই ক্ষতিটা করে দিল কিনা! বিপিএলের পর পরই পুরোনো চোট ফিরে আসা মানে তো বিপিএলেও চোট নিয়েই খেলেছেন। রুবেল অবশ্য তা বলছেন না, ‘সে রকম কিছু নয়। বিপিএলের সময় ব্যথা হলে তো আমি খেলতেই পারতাম না।’ ফিজিও বায়েজিদও সমর্থন করছেন তাঁকে, ‘বিপিএলে রুবেলের মাঠে নামার আগে আমরা সবগুলো প্যারামিটার পরীক্ষা করে দেখেছি। কোথাও সমস্যা ছিল না বলেই তাঁকে ম্যাচ খেলতে দেওয়া হয়।’
কিন্তু বিপিএলে তো নতুন কোনো চোট পাননি রুবেল! পুরোনো চোট তাহলে ফিরে এল কেন? ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ফিজিও ফিরে গেলেন একটু পেছনে, ‘ভারত থেকে ফেরার পরদিনই রুবেলের কাফ মাসলের এমআরআই করানো হয়। সে রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ছয় সপ্তাহ তাঁর চিকিৎসা চলে। তার পরও সমস্যা দূর না হওয়ায় ১০ নভেম্বর নতুন আরেকটা এমআরআই করানো হয়। তখন কাফ মাসলের আরেক জায়গায় সমস্যা ধরা পড়ে।’
প্রথম এমআরআইয়ের পর আর কোনো চোট পাননি রুবেল। ছয় সপ্তাহ চিকিৎসা চলার পর করানো এমআরআইতে তাহলে কেন আরেক জায়গায় চোট আবিষ্কৃত হবে! দুই মাসের মধ্যেই যেখানে মাঠে ফেরার কথা সেখানে কেন লেগে যাবে পাঁচ মাস! প্রথম এমআরআই কি তাহলে ছিল অসম্পূর্ণ? এই প্রশ্নে নিরুত্তরই থেকেছেন ফিজিও।