Thu. Apr 24th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

18খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট) বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত ‘এই’ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেন ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় অর্ধেক; ৫৮ কোটি ২০ লাখ ডলার।
চলতি হিসাবের ভারসাম্য বা ব্যালেন্স অফ পেমেন্টে ১৬৫ কোটি ডলারের বড় ঘাটতি (ঋণাত্মক) নিয়ে শেষ হয়েছিল গত অর্থবছর। তবে নতুন অর্থবছরের শুরুতেই উদ্বৃত্তে ফেরে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
গভর্নর আতিউর রহমান বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের দাম কমায় বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় কমেছে। পাশাপাশি বেড়েছে রপ্তানি আয়। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও বাড়ছে। এ কারণেই ‘স্বস্তিদায়ক’ এই উদ্বৃত্তি।
নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাব উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হল, নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে রপ্তানি আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি খাতে ব্যয় কমেছে ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বলেন, “পাঁচ মাসেই যেহেতু ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি উদ্বৃত্ত রয়েছে। অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।”
বি আইডিএসের এই গবেষকের ধারণা, কৃষি উৎপাদনে গত কয়েক বছরের সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকলে আমদানি ব্যয়ের লাগাম টেনে রাখা সম্ভব হবে। আর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম সহসা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কোনো আভাস না থাকায় পরিস্থিতি বাংলাদেশের অনুকূলে থাকার আশাই বেশি।
অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রবাসী আয়ের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের প্রায় সমান রেমিটেন্স এসেছে এবার।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে প্রবাসীরা ৭৪৮ কোটি ২৪ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৭৪৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার।
বাণিজ্য ঘাটতি ৩০৩ কোটি ডলার
জুলাই-নভেম্বর সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩০৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩০১ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
আর গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পুরো সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় এক হাজার কোটি ডলার।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে (এফওবিভিত্তিক, ইপিজেডসহ) মোট এক হাজার ৫৬০ কোটি ৪০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে বাংলাদেশ। আর পণ্য রপ্তানি থেকে (এফওবিভিত্তিক, ইপিজেডসহ) আয় হয়েছে এক হাজার ২৫৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে এ খাতের ঘাটতি ছিল ১৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা কমে ১২৩ কোটি ৬০০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।