খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে টসে জিতে শক্তিশালী ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রন জানিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুবদলের অধিনায়ক শিমরন হেটমায়ার (বাঁয়ে), নাকি তাঁর ভারতীয় প্রতিপক্ষ ইশান কিষান? ষ প্রথম আলোভারত চ্যাম্পিয়ন তিনবার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একবারও নয়। এই নিয়ে পাঁচবার ফাইনালে ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য এটা মাত্র দ্বিতীয় ফাইনাল। ১১তম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে আজ ফেবারিট কারা, সেটি আর না বললেও চলছে।
এবারের বিশ্বকাপে ভারত এখনো অপরাজিত থাকলেও তাদের ব্যাটিং আলো ছড়াতে পারেনি মিলিতভাবে। তবে বোলিংটা হচ্ছে খুবই ভালো। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই সময়ের প্রয়োজন মেটানোর সামর্থ্য দেখিয়েছে। তারপরও ইতিহাস ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরই পক্ষে।
ক্যারিবীয় অধিনায়ক শিমরন হেটমায়ারকে অবশ্য ইতিহাস নিয়ে খুব একটা চিন্তিত মনে হচ্ছে না। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল ফাইনাল-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেই বললেন, ‘এটা ঠিক, ভারত খুব ভালো দল, এখনো অপরাজিত। কিন্তু মাত্র দুই দিন আগেই তো আমরা আরেক অপরাজিত দল বাংলাদেশকে হারিয়েছি! কোনো একটা দল অপরাজিত আছে, এটাকে কোনো চিন্তার বিষয় মনে করি না আমি।’
অভিজ্ঞতায় ভারতের এগিয়ে থাকার ব্যাপারটা মাথায় রেখেই হেটমায়ার কথাগুলো বলেছেন। ইশান কিষানের ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার যেমন আছেন, আছেন আইপিএলে সুযোগ পাওয়া খেলোয়াড়ও। আন্তর্জাতিক ম্যাচও তারাই বেশি খেলেছেন। তবু ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মুখোমুখি হওয়ার আগে ক্যারিবীয় অধিনায়ককে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছেন পেসাররা, ‘নিজেদের পরিকল্পনায় ঠিক থেকে আমরা যতটা সম্ভব ভালো লেংথে বল করে যাব। পেস বল ভালো খেলে, এমন ব্যাটসম্যানও তখন মাথা নত করে ফেলে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৩ উইকেট নেওয়া পেসার কিমো পলের কথা মনে করিয়ে দিলেন হেটমায়ার। অধিনায়কের দৃষ্টিতে দলের ‘স্মার্ট বোলার’দের একজন তিনি, যার পক্ষে যেকোনো পরিস্থিতিতে বল করা সম্ভব। আবার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান গিডরন পোপের কাছে প্রত্যাশার কথাটা আলাদাভাবেই বললেন অধিনায়ক। দেশে নাকি তাঁকে সবাই তরুণ ‘ক্রিস গেইল’ নামে চেনে।
পল-পোপরা মিলে হেটমায়ারের হাতে শিরোপা তুলে দিতে পারলে নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে আজ যুব বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টে এর আগে নিজেদের একমাত্র ফাইনালটাও কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে বাংলাদেশে। কিন্তু ২০০৪ সালের সেই ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২৫ রানের হার ভেঙে দিয়েছিল তাদের শিরোপা-স্বপ্ন।
অন্যদিকে দুই বছর আগে আমিরাত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর টানা ১৫ ম্যাচ জিতেছে ভারতের যুবারা। সর্বশেষ ২১ ম্যাচ ২০টি জয়! ভারত অধিনায়ক ইশান কিষান অবশ্য পরিসংখ্যান বা প্রতিপক্ষের ‘কী আছে না আছে’র চেয়ে নিজেদের সামর্থ্যেই বেশি আস্থা রাখতে চান। টপ অর্ডারে অধিকাংশ ব্যাটসম্যানের দেশের সর্বোচ্চ ঘরোয়া আসরে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলারদের খেলে অভ্যস্ত তারা।
কিষান-সরফরাজদের অপেক্ষা তাই শুধু ফাইনালটা খেলতে নামার। ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। বোলাররা ঠিক জায়গায় বল ফেলছে। ইয়র্কার ও স্লগ ওভারের বোলিং অনুশীলন করছে। সবাই কালকের (আজ) জন্য প্রস্তুত। গত ১৪ ম্যাচের ১৪টিতেই জিতেছি (আসলে ১৫ ম্যাচে ১৫ জয়)। সেই কাজটাই আবার করতে হবে’—ভারত অধিনায়কের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস।
আগে ব্যাট করলে উদ্বোধনী জুটিটা ১২ ওভার পর্যন্ত টিকতে পারলে মিরপুরের উইকেটে ৩০০ রান সম্ভব বলে মনে করেন কিষান, ‘আমরা জানি কীভাবে রান বাড়াতে হয়, কখন মারতে হয়। ২৭০-২৮০ হলেই যথেষ্ট। তবে আমরা ৩০০ রানের চেষ্টা করব।’
ভারতের অভিজ্ঞতা আর সামর্থ্য টপকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যুবারা কি পারবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নতুন অধ্যায় লিখতে?
অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে দুদল
ভারত
সেরা সাফল্য
চ্যাম্পিয়ন ৩ বার
(২০০০, ২০০৮ ও ২০১২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সেরা সাফল্য
রানার্সআপ
(২০০৪)