Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : চট্টগ্রামের বহুল জনপ্রিয় গান ‘মধু হই হই বিষ হাওয়াইলা’। এটি গেয়েছেন সন্দীপন, নিশীতা, রন্টি দাশসহ অনেক জনপ্রিয় তারকারাই। কিন্তু তাদের কারো মুখে গানটি এতটা প্রচার পায়নি যতোটা পেয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ছোট্ট কিশোর জাহিদের কণ্ঠে।
গেল ২৫ ফেব্র“য়ারিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে আপালোড করে কক্সবাজার ডায়ালগ নামের একটি পেইজ। সেখান থেকে দিনে দিনেই ফেসবুক, ইউটিউবসহ অনলাইনে ভাইরাল হয়ে পড়ে সেটি। ভিডিওতে এক যুবকের গিটারের তালে তালে জাহিদের কচি ও মায়া ভরা কণ্ঠে ‘মধু হই হই বিষ হাওয়াইলা’ গানটি মুগ্ধ করছে সবাইকে। সাধারণ শ্রোতাদের পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, নাসির উদ্দিন ইউসূফ বাচ্চুর মতো শ্রদ্ধাভাজন নাট্য ব্যক্তিত্বও ভিডিওটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছেন ‘এক্সিলেন্ট’ ক্যাপশন দিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অনেকটা দুষ্টুমি করেই ভিডিওটি তৈরি করেছিলেন ইমরান হোসেন নামের এক যুবক। তিনি রাজধানীর বেসরকারি ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। একজন শখের ফটোগ্রাফার। গানও করেন। ‘১৮ঃয ণবধৎদং নামে একটা ব্যান্ডদলও আছে তার।
ইমরান জানালেন, কিছুদিন আগে কক্সবাজারে সমুদ্রপাড়ে ঘুড়তে গিয়েছিলেন ইমরান হোসেন এবং তার বন্ধুরা। সেখানেই দেখা হয় জাহিদের সঙ্গে। জাহিদের গলায় গান শুনেই ভালো লেগে যায় তার। তাই খালি গলায় গাওয়া গানটি ভিডিও করে ইউটিউবে ছাড়েন। কিছুদিনের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ভিডিওটি।
ইমরান জানালেন, কিশোর জাহিদ সাগর পাড়ে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের আরামের সময় শরীর ম্যাসাজের কাজ করে। আবার একটু আগ্রহ দেখালে গানও শোনায়। এতে খুশি হয়ে যে যা দেন তাই দিয়ে চলে তার সংসার।
ইমরান আরো বলেন, ‘মা আর এক ছোট বোন নিয়ে জাহিদের সংসার। বাবার খবর নেই। মায়ের পাশাপাষি সেও সংসারের জন্য উপার্জন করে। নিজে পড়াশোনা করতে পারেনি বলে ছোটবোনটাকে শিক্ষিত বানাতে চায়। সেই স্বপ্ন নিয়েই কাটে জাহিদের প্রতিটি দিন।’
আরো জানা গেল, সাগরপাড়ে জাহিদ বেশ জনপ্রিয়। ওকে সবাই খুব ভালো চিনে ও জানে। আসলে ওর চেহারাটা এমন শান্ত যে দেখলেই মায়া লাগে। হাসি খুশি প্রাণবন্ত একটা ছেলে। কী অসাধারণই না গায়। নানাভাবে মানুষকে আনন্দ দিয়ে বেড়ায়। অথচ, ওর কষ্টের গল্পগুলো ভীষণ রুক্ষ আর নিষ্ঠুর। একটু ভালোবাসা, একটু দেখাশোনার অভাবে অনিশ্চিত জীবনের পথে গানের এই দারুণ প্রতিভার।
ইমরানের ভাষায়, ‘সমুদ্র পাড়ের একটা ছোট ছেলে, যার মনে শুধু সুরের আর্তনাদ। কক্সবাজার যেয়ে পরিচয় হয়ে গেলো এই অসম্ভব মধুর একটি গলার সাথে। জীবনে তার কত কষ্ট। এই কষ্টের মাঝেও সে গান করে মানুষের মনে আনন্দ দিয়ে বেড়ায়। তাকে ভালো না বেসে পারা যায় না। আমি আবার যাবো তার কাছে। এই ছেলেটার জন্য কিছু করতে পারলে নিজের মনটাকে একটু হলেও আনন্দ দিতে পারবো।’