খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৬: মেডিটেশন বা ধ্যানের অনেক ভাল দিক আমরা জানি। মনকে শান্ত করতে, মনোযোগ বৃদ্ধি করতে এমনকি জীবনে সফল হতে মেডিটেশন করার পরামর্শ দেন অনেকে। দিনে দিনে মানুষের মাঝে মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। নানান রকম ঝুটঝামেলার জীবনে মনকে শান্তি দিতে, জীবনে স্থিতি আনতে, একাগ্রতা বাড়াতে ধ্যনমগ্নতাকে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু এই ধ্যান কি আপনার সম্পর্কগুলোরও যতœ নিতে পারে? মেডিটেশন কিভাবে সম্পর্ক ভাল রাখে, আসুন জেনে নিই এব্যাপারে মনোবিজ্ঞানীদের মত।
প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে
আপনি যখন নিয়মিত ধ্যান করেন আপনার রাগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বেড়ে যায়। সম্পর্কের টানাপোড়েনগুলো মূলত তৈরি হয় ভেতরের বিরক্তি, অপছন্দ থেকে যা আমরা প্রকাশ করি রেগে গিয়ে। কিন্তু পরে অনেক সময়ই দেখা যায়, পুরো বিষয়টিই ছিল ভুল বোঝাবুঝি। ধ্যান আপনাকে শান্ত হতে শেখায়। তখন আপনি বিচার করতে পারেন, সময় নেন এবং আপনার আবেগের প্রকাশগুলো হয় ধীর। তাই সম্পর্কে রূঢ় প্রভাব পড়ে না।
মন ভাল রাখে
আপনি ধ্যান করেন মনের ক্লান্তি দূর করতে। পার্থিব জটিলতা থেকে দূরে নিয়ে যান মনকে, চেষ্টা করেন শুদ্ধ বাতাস দিতে, নির্মল আবহাওয়া দিতে। ধ্যানের মাঝে আপনি কল্পনা করেন ভাল সময়ের, কল্পনা করেন শান্তিময় ভ্রমণের। ধ্যান শেষে আবার আপনি যখন বাস্তব জীবনে ফিরে আসেন, মন তখন সব যাতনা মুক্ত, ঝরঝরে। আর সবসময় ঝরঝরে এই মন অন্যদের সাথেও ভাল সম্পর্ক বজায় রাখে।
যোগাযোগ ভাল করে
ধ্যান করতে করতে নিজের কাজগুলো গুছিয়ে করতে শিখে যান আপনি। তখন গ্রামের বাড়ির আত্মিয়দের সাথে, দূরসম্পর্কের মানুষদের সাথে বা বন্ধুদের সাথে কারও সাথেই যোগাযোগ আর মিস হয় না। খেয়াল করে সবার খোজ রাখতেও শিখে যান আপনি।
নমনীয় আচরণ
ধ্যান আপনার আচরনকে নমনীয় করে। মনের কলুষতা দূর করে। আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে শেখেন মনের সমস্ত ভাবালুতা। কিছু মানুষ আছে যারা সারাক্ষণই দোষারোপ করতে থাকে। নিজের সমস্যার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। এইসব মানুষরা যখন ধ্যানের চর্চা করতে শুরু করে তখন তারা ধীরে ধীরে নমনীয় হতে শেখে।
সহানুভূতিশীলতা
অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শেখায় মেডিটেশন। আপনার মনে যখন স্থিতি বিরাজ করে তখন আপনি অন্যকে বোঝার মানসিকতা অর্জন করেন। আপনি সময় নেন। সহানুভূতিশীল হওয়া নেতিবাচক কিছু নয়। এটি সম্পর্ক মূল্যায়ণ করতে আপনার হাতিয়ার। আপনি যদি অন্যকে বুঝতেই না চান তাহলে তার সাথে আপনার কোথায় কি সমস্যা হচ্ছে তা বুঝতে পারবেন না। ধ্যান আপনাকে এই ধৈর্য্য দেবে।
নিজের সম্পর্কে পরিচ্ছন্নতা
মেডিটেশনের চর্চা নিজের সম্পর্কে আপনার ধারণাকে স্বচ্ছ করে। আপনি যখন নিজেকে জানেন তখন নিজের সমস্যাগুলো সহজে খুজে বের করতে পারেন। নিজেক বিচার করার ক্ষমতা অর্জন করেন। সম্পর্কের টানাপোড়েন, ভুল বোঝাবুঝির দায় কখনো এক পক্ষের নয়। কিন্তু সেই দায় আমরা সবসময় স্বীকার করি না। অন্যের কাছে তো নয়ই। নিজের কাছেও আমরা একটা ভাবমূর্তি ধরে রাখতে চাই। মেডিটেশন আমাদের নিজেকে জানার সৎ সাহস দেয়। ফলে সম্পুকের জট খুলতেও পারদর্শী হতে শিখি আমরা।