Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

14kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ৬ জুলাই ২০১৬: আপনার অবহেলা, খারাপ আচরণ, অতিরিক্ত চাপ, অপমান, দূরত্ব আপনার সন্তানকে আপনার কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে। এতে তার ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে পারে। বাবা-মায়ের অস্বাভাবিক ও রূঢ় আচরণ সন্তানকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলতে পারে। এ কারণে একসময় সন্তান কোনো অপরাধের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সন্তানের দিকে নজর দিন। সন্তানকে অপরাধী বা দূরে ঠেলে দিতে না চাইলে কিছু বিষয় সব সময় খেয়াল রাখুন। দ্য গার্ডিয়ান, মায়ো ক্লিনিক ও সিএলজি ওয়েবসাইটে দেওয়া পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।
যা খেয়াল করবেন
১. সন্তান চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে সবকিছু এনে দিতে হবে এই অভ্যাসটা বদলে ফেলুন। তাই বলে যদি সব কিছু্তইে ‘না’ বলেন, তাহলে সে অন্য কোনো জায়গা থেকে জিনিসটি খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করবে। আর সে যদি বিকল্প উপায় খুঁজে পায় তাহলে পরে আপনার কাছে কোনো কিছু চাইবে না। এটা খুবই খারাপ লক্ষণ। আপনার সন্তানের কখন কী প্রয়োজন এটা জানা খুবই জরুরি। কারণ এটা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন সন্তান কোন দিকে যাচ্ছে।
২. সন্তান একা থাকতে বেশি পছন্দ করে নাকি সবার সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে- ভালো করে খেয়াল করুন। সে যদি বেশির ভাগ সময় একা একা থাকে, তাহলে ঘন ঘন তাকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন। একাকিত্ব মানুষকে হতাশাগ্রস্ত ও সেখান থেকে অপরাধী করে দিতে পারে। তাই কোনোভাবেই সন্তানকে একা থাকতে দেবেন না। আবার বেশি বন্ধুদের সঙ্গ পছন্দ করলে, সেদিকেও নজর রাখুন। কোন বন্ধুর সঙ্গে যাচ্ছে, কার সঙ্গে বেশি সময় পার করছে, কে বাসায় বেশি আসছে সবকিছু ভালো করে লক্ষ করুন।
৩. সন্তানের যে বিষয়ে পড়ার আগ্রহ আছে, তাকে সে বিষয়ই পড়তে দিন। পছন্দের বিষয় না হলে সে ক্লাসে ফাঁকি দিতে পারে। ওই সময়টাতে সে অন্য জায়গায় সময় কাটাবে। আর সেই সঙ্গ যদি খারাপ হয়, তাহলে একটা সময়ে সে বিপদে পড়বে। তাই এই বিষয়টাতে নিজের পছন্দের কথা বাদ দিয়ে সন্তানের পছন্দের কথা চিন্তা করুন।
৪. সন্তানকে ‘কোন অপরাধের জন্য কোনো শাস্তি প্রাপ্য’ সেগুলো ছোটবেলা থেকেই শেখানোর চেষ্টা করুন। যাতে সে কোনো অপরাধ করার আগে এর পরিণতি সম্বন্ধে ধারণা করতে পারে।
৫. সন্তান কারো সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে কি না জানার চেষ্টা করুন। আবার তার সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে কি না, সেটাও খেয়াল রাখুন। কারণ বেশির ভাগ অপরাধগুলো এ করণেই তারা ঘটিয়ে থাকে।
৬. ফোনে বেশিক্ষণ কথা বলছে কি না খেয়াল রাখুন। কার সঙ্গে কথা বলছে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। কারণ আপনার সন্তান কার সঙ্গে বেশি যোগাযোগ রাখছে সেটা জানতে পারলে বুঝবেন তার বন্ধু কারা। কারণ বেশির ভাগ অপরাধই বন্ধুদের কারণে ঘটে থাকে।
৭. সন্তানের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপনিও যুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। তাহলে সে কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে সেটা আপনি সহজেই জানতে পারবেন।
যা করবেন
১. সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন। যাতে সে আপনার কাছে কোনো কিছু না লুকায়।
২. কোথায় যাচ্ছে এটা অবশ্যই জানার চেষ্টা করুন। তবে সব সময় বাধা দেবেন না। না হলে পরেরবার যাওয়ার সময় সে মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারে।
৩. আপনি সন্তানকে কতটা ভালোবাসেন সেটা বোঝানোর চেষ্টা করুন। অনেক সময় বাবা-মায়ের অবহেলার কারণে সন্তানরা বিপথগামী হয়ে যায়।
৪. পড়াশোনা বা বাহ্যিক কোনো বিষয়ে বেশি চাপ দেবেন না। কারণ অতিরিক্ত চাপ আপনার সঙ্গে তার সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে। এতে সে অন্য দিকে ঝুঁকে পড়বে।
৫. ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যেন আপনার সন্তান অন্য কারো কাছে না বলে, সেটা ভালো করে বুঝিয়ে বলুন। কারণ এই তথ্য থেকেই কেউ আপনার সন্তানের ক্ষতি করতে পারে।
যা বলবেন না
১. সন্তানকে সবার সামনে অলস বা পারে না এ ধরনের কথা বলবেন না। এতে সে বিষণ্ণতায় ভোগে। যা তাকে যে কোনো অপরাধে জড়িয়ে ফেলতে পারে।
২. ভালো রেজাল্ট করতেই হবে বা এই চাকরিটা পেতেই হবে, এমন কথা সন্তানকে বারবার বলবেন না। কারণ ভালো ফল না হলে আপনার সন্তানের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে।
৩. অন্য ভাইবোনদের সঙ্গে তুলনা করে কিছু বলবেন না। কারণ এতে সন্তানের মন ভেঙে যেতে পারে। আর পরে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণের জন্য অসৎ পন্থা অবলম্বন করতে পারে।
৪. ক্যারিয়ারের জন্য বারবার তাকে খোঁচা দিয়ে কিছু বলবেন না। কারণ ইন্টারভিউ দিলেই যে চাকরি হবে এমন কোনো কথা নেই। একটা না হলে আরেকটা হবে। সন্তানকে সাহস দেওয়ার চেষ্টা করুন, যাতে সে পরে ভালো করে ইন্টারভিউ দিতে পারে।
৫. আমি জানি তুমি পারবে না- এ ধরনের কথা না বলাই ভালো। কারণ এ ধরনের কথার কারণেই খারাপ ফল লুকানোর জন্য সে মিথ্য বলা শুরু করে।