এবারের ঈদে পরিবেশ রক্ষায় নেত্রকোণা পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় কোরবানীর জন্যে শহরের ৩৭টি স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এসব স্থানে কোরবানী দিতে শহরবাসকে সার্বিক সহায়তা করবে পৌরসভা। নির্দিষ্ট করে দেয়া এসব স্থানে সবাইকে কোরবানী দিতে পৌরসভার পক্ষ থেকে গত চার দিন ধরে শহরে মাইকিংসহ লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
নেত্রকোণা পৌরসভার সচিব আব্দুল ওয়াদুদ জানান, নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে সামিয়ানা টানিয়ে সেখানে বসার জন্যে চেয়ার রাখা হবে। কোরবানী দেয়ার জন্যে মৌলানাসহ প্রয়োজনীয় লোকবল থাকবে প্রতিটি নির্দিষ্টস্থানেই। মাংস কাটা, বিতরণসহ প্রত্যেকের বাড়িতে মাংস ভ্যান দিয়ে পৌছে দেয়ার দায়িত্বও থাকছে পৌরসভার কাঁধে।
নেত্রকোণা পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম খান বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো এই আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোরবানীর রক্ত ও বর্জ্য থেকে পরিবেশ দুষণ রোধে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেখানে সেখানে কোরবানীর রক্ত ও বর্জ্য ফেলে রাখলে পরিবেশ দুষিত হয়। তা ছাড়া দ্রুত এসব বর্জ্য পরিস্কার করা সম্ভব হয়না। এতে করে মানুষের কষ্টের কারন হয়। শহরের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে দ্রুত বর্জ্য অপসারণে কোরবানীর স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সকল কাউন্সিলরেরা নির্দিষ্টস্থানে কোরবানী দেয়ার তত্বাবধান করবেন। এসব স্থানে কোরবানী দেয়ার জন্যে শহরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন পৌর মেয়র।
শহরের মোক্তারপাড়া এলাকার পৌর বাসিন্দা মতিউর রহমান। পেশায় শিক্ষক। তিনি বলেন, নেত্রকোণা পৌরসভার নির্দিষ্টস্থানে পশু কোরবানী করলে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ ভাল থাকবে । এতে করে পরিবেশ দুষণ হবে না। তাছাড়া এই বর্জ্য থেকে ছড়ানো রোগের ঝুঁকিও থাকবে না ।
মোক্তারপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার উদ্যোগটি ভাল। এই উদ্যোগের কারনে পৌরবাসি নির্দিষ্টস্থানে সহজেই কোরবানী দিতে পারবেন।
সাতপাই এলাকার আরেক বাসিন্দা আসাদুজ্জামান রুমান। তিনিও একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। আসাদুজ্জামান রুমান বলেন, এবার তিনি পৌরসভার নির্দিষ্ট করে দেয়া স্থানেই কোরবানী দেবেন।তিনি বলেন, পৌরসভার এই উদ্যোগটি ভাল।পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকবে আমাদের শহর বলেন আসাদুজ্জামান।
যেসব স্থানে কোরবানীর ব্যবস্থা থাকছে : এক নাম্বার ওয়ার্ড ছোটগাড়া জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা,বর্শিকুড়া জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা,উত্তর সাতপাই জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা, প্রফেসর পাড়া জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা,গ্রাম সাতপাই জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা , দক্ষিণ সাতপাই জামে মসজিদের সামনের খোলা জায়গা ।
দুই নাম্বার ওয়ার্ড- গাড়া রোডের লালু-কালুর মাঠ, দক্ষিণ সাতপাইয়ের সওদাগরপাড়ার মাঠ,চকপাড়া মাঠ ।
তিন নাম্বার ওয়ার্ড – চকপাড়া মালগুদাম মাঠ,মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ , মঈনপুর ঈদগাহ মাঠ, পূর্ব মঈনপুর ঈদগাহ মাঠ।
চার নাম্বার ওয়ার্ড- বাহিরচাপড়া পূর্বপাড়া ঈদগাহ মাঠ, রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুল মাঠ,বালুয়াখালি ঈদগাহ মাঠ, জামিয়া মিফতাহুম উলুম মাদ্রাসার মাঠ, বারহাট্রা রোডের মহিলা মাদ্রাসার মাঠ।
পাঁচ নাম্বার ওয়ার্ড- চন্দ্রনাথ স্কুল মাঠ,শিবগঞ্জ নদীরপাড় / গোদামের সামনের মাঠ,পশ্চিম মালনী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ, পূর্ব মালনী আমগাছতলা মসজিদ মাঠ,উত্তর মালণী মসজিদের সামনের মাঠ।
ছয় নাম্বার ওয়ার্ড- বড়বাজার মসজিদের পিছনের খোলা জায়গা, আরামবাগ তথ্য অফিস সংলগ্ন খোলা জায়গা।
সাত নাম্বার ওয়ার্ড- জয়নগর মাঠ, পৌর পানি সরবরাহ শাখা অফিস সংলগ্ন ফাঁকা মাঠ।
আট নাম্বার ওয়ার্ড- উত্তর নাগড়া জেলা পরিষদ সংলগ্ন মাঠ, মধ্য নাগড়া পথকলি স্কুল মাঠ, নাগড়া পশ্চিম আনন্দবাজার সংলগ্ন মাঠ।
নয় নাম্বার ওয়ার্ড- ধারিয়া মফিজআলী বাড়ির মোড় , খতিবনগুয়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বলাই নগুয়া মানিক মিয়ার বাড়ির সামনের মাঠ, কুড়পাড় বিএডিসির সামনের মাঠ,পারলা রাহি মিয়ার মিলের সামনের খোলা জায়গা, হোসেনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও চল্লিশাকান্দা খালপাড় মাঠ।