প্রায় একমাসেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছেন অভিনেতা ফখরুল হাসান বৈরাগী। শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী রাজিয়া হাসান।
তিনি জানান, গত ৭ আগষ্ট থেকে রহস্যজনকভাবে উধাও রয়েছেন বৈরাগী। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ। হজ্বে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সেখানে তিনি গিয়েছেন কী না তাও স্ত্রী, সন্তানরা জানেন না।
রাজিয়া হাসান বলেন, ‘গত ৭ আগস্ট সকালে ছেলে সামন্ত হাসান ইসাকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে বাসায় আসেন তিনি। এরপর বাসার দারোয়ানের কাছে গাড়ির চাবি রেখে আবার বের হয়ে যান। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। এরইমধ্যে আমরা পুলিশ ও র্যাবের কাছে ঘটনাটি জানিয়েছি। তারা উদ্ধার কিংবা খোঁজ পাওয়ার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন বলে জানালেও সেখান থেকে এখনও কোনো খবর পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে ২৯ বছর সংসার করছি। এ সময়ের মধ্যে কখনোই একবারের জন্যেও না বলে কোথাও যাননি। শুটিং কিংবা ব্যক্তিগত কাজ, সবই জানাতেন। কথা ছিল পরিবারের চার সদস্য মিলে আমরা হজে যাব। কিন্তু সেটা আর হয়নি। তিনি কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন জানি না। আমি খারাপ কিছু ভাবতে চাই না। আমি চাই তিনি ফিরে আসুক।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারিবারিক বিরোধের কারণে আড়ালে রয়েছেন বৈরাগী। তবে সেটা আড়াল নাকি গুম তা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। বৈরাগীর স্ত্রীও এ প্রসঙ্গে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তবে বিরোধের বিষয়টি তিনি পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছেন। বিস্তারিত কিছু এখনই বলতে নারাজ। শুধু বলেছেন, বৈরাগী ফিরে না এলে আমি সবকিছু ফাঁস করে দেব।’
রাজিয়া হাসানের কথার সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই ভাই, দুই বোন ও ভাইদের স্ত্রীদের সঙ্গে ফখরুল হাসান বৈরাগীর বিরোধ রয়েছে। এ কারণে মা ও হাতিরপুলে নিজ বাসা ছেড়ে সম্প্রতি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠেন তিনি। মা অসুস্থ স্বত্ত্বেও ভাই-বোনদের অত্যাচারের কারণে তাকে ছেড়ে আসতে হয়েছে। এজন্য বেশ কিছুদিন বৈরাগী মানসিকভাবে অসুস্থও ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৈরাগীর স্ত্রী রাজিয়া হাসান বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধের জের ধরে বৈরাগীর দুই বোন আমার গায়েও হাত তুলেছে। কিন্তু পারিবারিক সম্মানের কথা চিন্তা করে বিষয়টি বেশিদুর এগুতে দিইনি। আমরা নিজেরাই বাসা ছেড়ে দেই। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি।’
ফখরুল হাসান বৈরাগীর গুম কিংবা উধাও হওয়ার পেছনে তার ভাই-বোনদের হাত রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজিয়া বলেন, ‘এখনই কিছু বলতে চাই না। আমি আরও অপেক্ষা করবো। তবে বেশিদিন নয়। যদি আমার স্বামী ফিরে না আসে তাহলে সবকিছু ফাঁস করে দেব।’
কী প্রসঙ্গে কিংবা কার গোপন কথা ফাঁস করবেন রাজিয়া সেটা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি।