শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

65খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৬:
কোথায় সেই ডাকাবুকো মিমি! রাজ আর ভাঙা প্রেমের কথা উঠতে কেঁদে ফেললেন। সামনে ইন্দ্রনীল রায়

এক বছর আগে পূর্ব কলকাতার এই পাঁচতারা হোটেলেই তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। এ বার একটা তফাত। সে দিন এসেছিলেন রাজ চক্রবর্তীর সাদা মার্সেডিজ এসইউভি-তে। এ বার নিজের গাড়িতে।
সেই এক টেবিল কিন্তু।
(হাসি) হ্যাঁ, তাই তো দেখছি।
ইন্টারভিউ শুরু করি?
(প্রচণ্ড হাসি)
হাসছেন কেন?
এমনি হাসছি। বুঝতে পারছি তো কী হতে চলেছে (হাসি)। বলুন ৃ
এটা কি জানেন, হঠাৎ করে আপনাকে নিয়ে একটা আগ্রহের বিস্ফোরণ তৈরি হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। শুরু হয়েছিল এবিপি আনন্দ-তে সেরা বাঙালি সঞ্চালনা থেকে। তার পর ব্রেক আপ। ‘গ্যাংস্টার’য়ের সোলো হিরোইন। এখন শিবপ্রসাদ-নন্দিতার পরের ছবিতে আপনি।
ইয়েস, শিবুদা আর নন্দিতাদির পরের ছবিটা করছি। পরের বছরের অন্যতম বড় ছবি যে এটা হবে সেটা আজই বলে দেওয়া যায়। আমি, সৌমিত্রজেঠু (চট্টোপাধ্যায়) আর যিশুদা (সেনগুপ্ত) আছি ৃ
অফারটা কবে পেলেন?
গত মাসের শেষের দিকে, রাত্তিরে শিবুদার ফোন এসেছিলৃ
ওহ, আজকাল রাতে তা হলে আপনার কাছে ফোন আস্তে
(হাসি) আরে, মেয়েদের কাছে রাতে ফোন আসবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
না এলেই টেনশন হওয়া উচিত। শিবুদা ফোন করে আমাকে ছবিটা করার অফার করল। এই ছবিতে, আই প্লে আ মাদার।
যিশু আপনার হাজব্যান্ড?
হ্যাঁ, যিশুদা হাজব্যান্ড। সেই ‘কেলোর কীর্তি’ থেকে যিশুদা আমার বর। (হাসি) যেহেতু এটায় মায়ের চরিত্র তাই শিবুদাকে সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলিনি। সে দিন সারারাত ভেবেছি কী করা উচিত! পরের দিন সকালবেলা উঠে ফার্স্ট ফোনটা শিবুদাকে করি। জানিয়ে দিই, আমি ছবিটা করতে রাজি।
এটা আপনার জীবনের বেস্ট ফেজ?
জগন্নাথের কৃপায় আমি খুব ভাল জায়গায় রয়েছি। মনে হয় পরের বছর আরও ভাল যাবে।
আপনাকে নিয়ে সীমাহীন আগ্রহের কথা তো আগেই বললাম। যা বলা হয়নি, আপনার সিঙ্গল হওয়ার পর বারুদটা আরও জোরদার হয়েছে।
তাই? সিঙ্গল হওয়ার পর বেড়েছে?
হান্ড্রেড পার্সেন্ট বেড়েছে। এমনিতে ডাকাবুকো বলে আপনাকে কেউ অ্যাপ্রোচ করতে ভয় পায়। তার ওপর আপনি ছিলেন রাজ চক্রবর্তীর গার্লফ্রেন্ড। মিমিকে অ্যাপ্রোচ করার আগে সবাই দশবার ভাবতেন। আজকে সেটা নেই।
সত্যি বলতে, আমার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির একটা যে তফাত হয়েছে, সেটা বোধহয় আমিও বুঝতে পারি। আজকে আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিই। কোনও কিছুর বোঝা আর আমাকে বয়ে বেড়াতে হয় নাৃ
কীসের বোঝা নিয়ে চলছিলেন? সম্পর্কের?
না, সম্পর্কের বোঝা নয়। ওই চার বছর রাজের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা আমি রেসপেক্ট করি। সেটা বোঝা ছিল না, তবে সম্পর্কের প্রেশার তো থাকেই।
আনন্দঢ়ষঁং-এ আপনার আগের ইন্টারভিউয়ের হেডলাইন ছিল ‘লাভ লাইফ নিয়ে বললে নজর লেগে যাবে’ৃ
(দীর্ঘশ্বাস ফেলে) নজর লেগে তো সম্পর্কটা ভেঙেই গেল। আসলে কালকে কী হবে, ভবিষ্যতে কী করব — এগুলো নিয়ে আমি কথাই বলতে চাইতাম না। তাই কোনও দিন কোনও ইন্টারভিউতে খুব একটা কিছু বলিনি রাজের সঙ্গে আমার রিলেশনশিপের ব্যাপারে।
আজ অনেক কিছু দেখে এটুকু বুঝেছি, মা-বাবা, আর নিজের কাজ ছাড়া কোনও কিছু আপন নয়।কিছু ব্রেক আপ সত্যি পেনফুল মিমিৃ
ওই পেন-য়ের দিকটায় আমাকে আর নিয়ে যাবেন না প্লিজৃ
কিন্তু এত দিন তো লোকে শুধু ডাকাবুকো, সাহসী মিমিকেই দেখেছে। আজকে আনন্দঢ়ষঁং-এর ইন্টারভিউতে ইমোশনাল মিমিকে মানুষ দেখুক না।
আমি চাই না, আমার ইমোশনাল দিকটা কেউ দেখুক। আই অ্যাম আ স্ট্রং, স্ট্রং গার্ল। ‘দেখো আমি বাড়ছি মাম্মি’ টাইপস। আমি চাই না আমি কাঁদছি কেউ দেখুক।আমি যে মানুষটাকে চিনতাম, যার সঙ্গে আমার চার বছরের সম্পর্ক ছিল সেই মানুষটার সঙ্গে ওই টোন-য়ে কথা বলা রাজ চক্রবর্তীকে আমি মেলাতে পারিনি। আমার ভয়েস মেসেজ, ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট — সব কিছু মিডিয়ার সামনে ছিল তখন। আই ফেল্ট টেরিবল।ছবি: কৌশিক সরকার।
মিমি চক্রবর্তী কি একা একা কাঁদেন?
(মাথা নিচু করে) কাঁদে। মা-বাবার সামনে কাঁদে না কিন্তু একা থাকলে কাঁদে। কোনও দিন বলিনি, যখন কাঁদি তখন মিউজিক সিস্টেমটার ভলিউমটা ম্যাক্সিমাম করে দিই। আমি কাঁদছি কেউ শুনুক, সেটা আমি চাই না।
আমার সঙ্গে তখন শুধু চিকু, আমার ল্যাব্রাডর থাকে। ওর সামনে কাঁদতে ভয় করে না কারণ ও জাজমেন্টাল নয়।
মিমি, আজকে আপনাকে ওই জুন-জুলাই মাসে একটু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কেন করছেন এ রকম?
করছি কারণ, আপনার আর রাজের ব্রেক আপটা আপনাদের দু’জনকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের কাছেও শকিং ছিল।
(নীরবতা)
জুন মাসে আমেরিকায় বঙ্গ সম্মেলনে এক সঙ্গে গেলেন। ফেরার পথে এ-৩৮০ ফ্লাইটে সিট পাল্টালেন যাতে আপনি আর রাজ পাশাপাশি বসতে পারেন। আমি রাজের সঙ্গে পুরীতে ছিলাম যখন তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থান হয়। রাজকে সেটা বলাতে রাজ সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে ফোন করলেন। তার পনেরো দিনের মধ্যে সব শেষ!
তা হলে কয়েকটা কথা বলি। আমি আপনাকে চিনি। আপনি আমাকে। আমার কানে কথা এল, আপনি আমার নামে নানা বাজে কথা বলছেন। কিন্তু যেহেতু আমি আপনাকে চিনি, আমি চাইব আপনার সঙ্গে বসে সেই কথাগুলো ক্ল্যারিফাই করতে। রাজের সঙ্গে বসে এই কথাটা আমার আর হয়নি। সেখানে কিছু মিডলম্যান এসে বলল, মিমি খারাপ। আর রাজ মেনে নিল, মিমি খারাপ! আমি তো ওর থেকে বয়সে ছোটৃ
অনেকটা ছোটৃ
হ্যাঁ। যারা রাজের বন্ধু তাদেরকে আমার সামনেই রাজ বলত, মিমি খুব ইমম্যাচিওর্ড। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ইমম্যাচিওরিটি তো আমি দেখাইনি। এই মিডলম্যানদের কথায় সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার ইমম্যাচিওরিটি তো ও দেখাল।
আমি আজকে আপনাকে কনফেস করে বলছি, আমি কিন্তু ভিলেন নই। এই সম্পর্ক শেষ হওয়ার পিছনে আমাকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা চলছে কিন্তু আই অ্যাম নট দ্য ভিলেন।
আপনার আর রাজের ব্রেক আপের স্টোরিটা আনন্দঢ়ষঁং-এ প্রথম বেরোনোর পরের দিন তো রাজ মিডিয়াতে নানা কথা বলেছিলেন।
হ্যাঁ। আমি যে মানুষটাকে চিনতাম, যার সঙ্গে আমার চার বছরের সম্পর্ক ছিল সেই মানুষটার সঙ্গে ওই টোন-য়ে কথা বলা রাজ চক্রবর্তীকে আমি মেলাতে পারিনি। আমার ভয়েস মেসেজ, ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট — সব কিছু মিডিয়ার সামনে ছিল তখন। আই ফেল্ট টেরিবল। আজকে আমার খুব স্ট্রংলি মনে হয়, ওকে অনেকে উস্কেছিল। হি ওয়াজ প্রোভোকড। না হলে রাজ ও রকম করার ছেলে নয়।
আপনি ওকে ফোন করে বলেননি কেন?
আমার সঙ্গে রাজের তো আর কোনও টকিং টার্মস নেই। উই ডোন্ট টক এনিমোর। আজকে যখন একা একা ভাবি একটা কষ্ট তো হয়ই। ভাল স্মৃতিগুলোৃকোনও ব্রেক আপ যখন তিক্ততায় শেষ হয়, সেখানে কি আর ভাল স্মৃতি থাকে? তখন তো শুধু ঝগড়া-অশান্তিটাই মনে থেকে যায়।
একদম ঠিক বলেছেন। তাও চেষ্টা করি ভাল মুহূর্তগুলো মনে করতে।
একটু আগে তো আমায় গল্প করছিলেন যে, এ বার পুজো খুব ভাল কেটেছে। সত্যি কি ভাল কেটেছিল?
(দীর্ঘশ্বাস) ওই কেটেছিল একরকম। এই পুজোতে আমার যত বিজ্ঞাপনের কাজ ছিল, তার ডেটসগুলো পুজোর মধ্যে রেখেছিলাম। ১৮-১৯ ঘণ্টা করে শ্যুট করতাম পুজোর দিনগুলোয়। তার পর ফ্রি হলেই একজনকে ফোন করে বলতাম, তুই কোথায়, আমি আসছি তোর কাছে। সেই বন্ধুটার নাম নুসরত জাহান।
দিস ইজ অ্যাবসোলিউটলি স্টানিং। পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে আজকাল কথা চলে, কে নম্বর ওয়ান? আপনি না নুসরত? যাঁদের মধ্যে এত কম্পিটিশন তাঁরা এত ভাল বন্ধু?
ইয়েস, তারা সত্যি এত ভাল বন্ধু। নুসরতের সঙ্গে আমার বন্ডিংটা অসম্ভব পিওর। আর আই অ্যাম আ হিউম্যান বিয়িং। আই নিড ফ্রেন্ডস। আমার বন্ধুর দরকারৃ
বন্ধু তো সবার দরকারৃ
কারেক্ট। নুসরত আমার বোনের মতো। আমি ওকে বকি। ও আমাকে বকে। দু’জনে নানা কথা বলি। ও আমাকে বোঝায়। আমি ওকে বোঝাই। আমি এটুকু জানি রাত তিনটের সময় আমার কোনও দরকার হলে একজনই ছুটে আসবে। নুসরত।
যখন রাজের সঙ্গে ব্রেক আপ হতে চলেছে, নুসরতকে কি আপনি প্রথম জানিয়েছিলেন?
আমি তো তখন বুঝতেই পারিনি যে এটা ব্রেক আপে পরিণত হবে। সে সময় আমি তুরস্কে, হঠাৎ দেখলাম রাজ আমাকে ব্লক করে দিয়েছে ফোনে। নুসরতকে ফোন করে বলেছিলাম, রাজকে বল আমাকে ব্লক না করতে। আমি ওর সঙ্গে কথা বলতে চাই।
অদ্ভুত লাগছে আপনার কথাগুলো শুনে। আনন্দঢ়ষঁং-এর তরফে আমি তখন ছিলাম ওখানে। অত ভাল লোকেশন, অত আনন্দ। তার পাশাপাশি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় বইছে, সেটা একেবারে বুঝিনি। এটা আমার তরফে প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি।
বলেছিলাম না, আমি ভাল অভিনেত্রী। আই অ্যাম আ গুড অ্যাকট্রেস (হাসি)। হ্যাঁ, আশেপাশে যখন অত হইহই, তখন আমার পার্সোনাল লাইফ ওয়াজ ইন শ্যাম্বল্স। আয়রনি অব ফেট।
আপনার তাই মনে হয়?
ইয়েস। তাই মনে হয়। পেনফুল পেনফুল সব মোমেন্টসৃ
সে সময় রাজের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছিল। রাজ বলেছিলেন, আপনার মা-বাবার সঙ্গে ওঁর বন্ডিংটা অসম্ভব ভাল ছিল।
(চোখভর্তি জল) ইয়েস, আমার মা-বাবার তো কোনও ছেলে নেই। রাজ ছিল ওদের ছেলের মতো।
আপনিও তো রাজের মায়ের খুব ক্লোজ ছিলেন?
একটু বন্ধ করি ইন্টারভিউটা, ইন্দ্রনীলদা।শিওর। টেক ইয়োর টাইম।
(অনেকক্ষণ চুপ থাকলেন। চোখ বেয়ে জল। সেটা মুছে ব্ল্যাক কফিতে চুমুক দিলেন। ওয়েটারকে ডেকে আর এক কাপ কফি অর্ডার করলেন। তার পর বললেন, “বলুন”)
কাজের কথায় ফিরি। শিবপ্রসাদের ছবির ব্যাপারে বলুনৃ
দেখুন, আমি শিবুদা আর নন্দিতাদির ছবির বিরাট ভক্ত। এই ছবিটা আমার কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জ। আপনার সঙ্গে ইন্টারভিউ শেষ করে আমি শিবুদার বাড়ি যাচ্ছি। ওখানে জয়েন্ট স্ক্রিপ্ট রিডিং। শুনেছি এই ছবিতে আমার অনেক ডায়ালগ। তা ছাড়া আমার আর সৌমিত্রজেঠুর বেশ কিছু সিন আছে যেখানে সৌমিত্রজেঠুর কোনও ডায়ালগ নেই, ডায়ালগ শুধু আমার। ওঁর মতো অ্যাক্টরের সঙ্গে এ রকম সিন করা কতটা চ্যালেঞ্জিং সেটা আমি জানি। আমার হোমওয়ার্ক ভাল হতেই হবে।
আমরা এটাও শুনেছিলাম, এক সময় মিমি চক্রবর্তীর ওপর নাকি অনেক রেস্ট্রিকশন ছিল। আজকে নাকি আপনি সেই রেস্ট্রিকশনগুলো নিজের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
রেস্ট্রিকশন বলতে আমার বাবা-মায়ের তরফ থেকে ছিলৃরাজের তরফ থেকে কিছু ছিল না?
না, না, একদমই নয়। কোনও দিন ছিল না।
কী রকম রেস্ট্রিকশন ছিল? তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে, নো লেট নাইট?
না, না, ও রকম নয়। ইনটিমেট সিন করা নিয়ে অসুবিধা ছিল। বোল্ড দৃশ্য না-করার রেস্ট্রিকশন ছিল। আজকে আমি বাবা-মাকে বোঝাতে পেরেছি যে আমি একজন অভিনেতা এবং ও রকম সিন আমাকে করতে হতে পারে। ওঁরাও বুঝেছেন। মনে আছে ‘চতুষ্কোণ’য়ের জন্য সৃজিতদা আমাকে রোল অফার করেছিলৃ
কোনটা? পায়েলের রোলটা?
ইয়েস। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ইনটিমেট সিন আছে কি? সৃজিতদা হ্যাঁ বলার পর আমি আর রোলটা করিনি।
আপনার ব্রেক আপের পরে অনেকে মজা করে বলতেন, এ বার সৃজিতের স্পিড ডায়ালে নাকি আপনার নম্বর থাকবেই থাকবে?
(হাসি) ধুর! কোথায়? সৃজিতদা তো ফোন করল না। ফোন করল শিবুদা।
একটু মিলি-র প্রসঙ্গে ফিরছি। যাঁরা আপনাকে ‘গানের ওপারে’ থেকে চেনেন, তাঁদের বক্তব্য ছিল, মিমি যতটা বাঙালি, ওর ওই টার্কিশ বয়ফ্রেন্ড বেশি দিন পোষাবে না।
(হাসি) দেখুন, চল্লিশ দিনের আউটডোর ছিল, আমার মিলিকে ভাল লাগত। ব্যস, সেট-য়ে ওর সঙ্গে মজা করতাম। এ টুকুই। কোনও দিন মিলি আর আমি একসঙ্গে বেড়াতে যাইনি, কী খেতে যাইনি। গেলেও যেতাম গ্রুপে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে অন্যদের কথা কেউ বলত না, বলত আমার আর মিলির কথা।
মানে, হাল্কা ‘ফ্লিং’ যাকে বলে ইংলিশে?
ফ্লিংয়ের পর্যায়েও পৌঁছয়নি ব্যাপারটা। তার আগেই আমাকে অ্যাকিউজ করা শুরু হয়ে গেল যে আমি নাকি প্রেম করছি। তখন বুঝিনি আমার জীবনটা এত বদলে যাবে। যাকে চার বছর বিশ্বাস করেছি, তার ও রকম রিঅ্যাকশনটা আমি মেনে নিতে পারিনি। আমি কোনও দিন একটা কথা বলিনি, আমার কানেও কিন্তু রাজের আউটডোর নিয়ে অনেক কথা আসত।
যারা বলত, তাদের আমি বলতাম, সেটা আমার আর রাজের ব্যাপার। আমরা বুঝে নেব। সেকেন্ড দিন থেকে তাদের আর ফোন আসেনি। রাজ এই অ্যাটিটিউডটা নিল না। থার্ড পার্সনের কথা শুনল।
যখন আনন্দঢ়ষঁং-য়ে খবরটা বেরিয়েছিল, আপনি কিন্তু খবরটা অস্বীকার করেননি।
তখন ডিনাই করব কী করে? তখন তো পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে চাউর হয়ে গেছে যে আমি প্রেম করছি। তখন ডিনাই করলে মনে হত আমি গিল্টি, নিজেকে ডিফেন্ড করছি। আর আমি তো আমার নিজের লোককেই বিশ্বাস করাতে পারিনি যে আমার সঙ্গে মিলির কোনও প্রেম নেই। তা
হলে বাইরের লোককে আর কী বোঝাব? সে সময় আমাকে খুব সাপোর্ট করেছিল বিরসাদা (দাশগুপ্ত)। আমি ওকে বড় ভাই বলি। ও আমার পাশে যে ভাবে দাঁড়িয়েছিল, সেটা সব সময় মনে রাখব।
আজকে কি আপনি সিঙ্গল?
ইয়েস। সিঙ্গল।
রাজ আর শুভশ্রী তো প্রেম করছেন — শুনেছেন নিশ্চয়ই?
(প্রচণ্ড হাসি) নো কমেন্টস।
কিছু তো বলুন?
ভগবান ওদের মঙ্গল করুন।
গড ব্লেস দেম।
শুভশ্রী কোনও দিন আপনার বন্ধু ছিলেন না?
না। নেভার।
একটা কথা জিজ্ঞেস করছি। রাজ আর আপনার মধ্যে কোনও দিন বিয়ে নিয়ে কথা হয়েছিল?
(অনেকক্ষণ চুপ) খুব কম লোকেই জানে। কিন্তু হ্যাঁ, বিয়ে নিয়ে কথা হয়েছিল।
আজকে রাজের সঙ্গে কোথাও দেখা হলে অস্বস্তি লাগবে না?
সে দিন একটা কালীপুজোতে দেখা হল। রাজ ওর গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে ছিল।
আপনি জানেন আপনি কী বলছেন?
(হাসি) হ্যাঁ জানি।
এই বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে এই নভেম্বর মাস — জীবন অনেকটাই বদলে গেল। তাই না?
হ্যাঁ, ফার্স্ট জানুয়ারি আমি আর রাজ পুরী গিয়েছিলাম একসঙ্গে। সে দিক থেকে দেখলে, সত্যি অনেকটা বদলে গেছে জীবন।
আমি সে দিন একজনকে বলছিলাম, ভগবান আমার ভালই করলেন এতটা দুঃখ দিয়ে। এটার জন্য আমি বেটার মানুষ হলাম। আমার ধারণা বেটার অভিনেত্রী হব এর পর।
এত কথা বললেন, এই ইন্টারভিউটা নিয়ে চর্চা হবে। নুসরত কী বলবেন এটা পড়ে?
বেরিয়েই নুসরতকে বলব আনন্দঢ়ষঁং-কে ইন্টারভিউ দিয়েছি। নুসরত শুধু আমাকে বলবে, উল্টোপাল্টা কিছু বলিসনি তো?
আগের বার যখন রাজের সঙ্গে ব্রেক আপের স্টোরিটা বেরিয়েছিল, নুসরত আমাকে ভোর ছ’টায় ফোন করে বলেছিল, ‘‘মিমি, তুই কাগজটা লুকিয়ে দে।’’
আমি সেই মতো আমার কাজের মেয়েকে বলে কাগজ লুকিয়ে ফেলেছিলাম। সকালে দেখি কাগজ না পেয়ে মা ইন্টারনেটে আনন্দবাজার খুলে পড়ছে। আমিই মাকে ফোনে পেপার পড়াটা শিখিয়েছিলাম। সেটা নিয়ে আমি যে কেস খেয়ে যাব, তখন বুঝিনি। (হাসি) মা দেখি খবরটা ফোনে পড়ে বলছে, আরে পেপারটা কোথায়? আমি তখন কাজের মেয়েটাকে বললাম, চুপিচুপি হাল্কা করে পেপারটা রেখে দে যাতে কেউ বুঝতে না-পারে পেপারটা আমরাই লুকিয়েছিলাম (হাসি)।
হা হা। থ্যাঙ্ক ইউ মিমি এতটা খোলাখুলি কথা বলার জন্য।
থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ। এখন শুধু মন দিয়ে কাজ করতে চাই।
আর এ বার ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের থালি গার্ল আমি। এই সম্মানটুকু পেয়ে আরও ভাল লাগছে। জানেন, এই ক’মাসে জীবন আমাকে অনেক কিছু দেখাল। আজকে মনে হয়, যাই প্রবলেম আসুক না কেন, ঠিক তা সামলে নিতে পারব। সব মিলিয়ে, মিমি চক্রবর্তী বিন্দাস আছে।