খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৬:
যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী বিতর্কিত তুর্কি ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের অনুসারী অভিযোগে একশত তুর্কি শিক্ষক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের পাকিস্তান ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়িপ এরদোগানের আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত রোববার তুর্কি শিক্ষক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা বাতিল করে দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
লিখিত নির্দেশে, আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের পাকিস্তান ছাড়তে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানে ১৯৯৫ সালে তুর্কি সরকারের একটি আন্তর্জাতিক এনজিওর অধীনে পাক-তুর্ক আন্তর্জাতিক স্কুল ও কলেজ চালু হয়। লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, মুলতান, করাচি, হায়দারাবাদ, খায়েরপুর, জামশোরো এবং কোয়েটায় প্রতিষ্ঠানটির ২৮টি শাখা রয়েছে।
সব শাখা মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে আসছে। তাদের পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন ১০৮জন তুর্কি শিক্ষক ও কর্মকর্তা। তাদের সঙ্গে পরিবারের চারশ’ সদস্যও বসবাস করেন।
গত ১৫ জুলাই তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিবাসী ফেতুল্লাহ গুলেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে তুর্কি সরকার।
দেশে ফিরিয়ে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাকে প্রত্যর্পণেরও দাবি জানিয়ে আসছে দেশটি।
এদিকে গুলেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত লক্ষাধিক তুর্কি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা ও বিচারককে বরখাস্ত এবং গ্রেফতার করেছে তুর্কি সরকার।
এছাড়া গুলেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশ্বব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এর ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানে চালু হওয়া তুর্কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও অবস্থান নেয় তুরস্ক। গত আগস্টে পাকিস্তান সফরকালে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসুগ্লু এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববার তুর্কি শিক্ষকদের পাকিস্তান ত্যাগের নির্দেশে দেয়া হলো।
এদিকে এই নির্দেশকে ‘আকস্মিক’ আখ্যা দিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন স্কুলটির মূল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পাক-তুর্ক শিক্ষা ফাউন্ডেশন।
ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর সব তুর্কি অধ্যক্ষকে পরিবর্তন করে পাকিস্তানী শিক্ষক নিয়োগ করেছি। আমাদের সঙ্গে গুলেন মুভমেন্টের কোনও সম্পৃক্ততা নাই। ফলে শিক্ষকদের পাকিস্তান ত্যাগের সিদ্ধান্তের কোনও যথার্থতা নেই।