খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০১৬:
বাল্যবিবাহের হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ লজ্জাজনক অবস্থানে আছে। এ অবস্থায় আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ বছর করা হলে তা বাংলাদেশের জন্য আরো লজ্জাজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র আয়োজিত ‘আইনে কন্যাশিশুর বিয়ের বয়স শর্তহীনভাবে ১৮ বছর বহাল রাখার দাবি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হলে তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তারা অপরিপক্ক শরীরে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। তাদের অনেকে অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেয়। অন্যদিকে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে মেয়েদের বিকশিত হওয়ার পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে তারা শিক্ষিত ও স্বাস্থ্যবান হয় এবং উপার্জনের সুযোগ পায়, যে উপার্জন তারা পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাল্যবিবাহ হওয়ার মূল কারণ হলো সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। বর্তমানে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। অপছাত্ররাজনীতি ও বখাটেপনা বেড়েছে। তাই বাল্যবিবাহ বন্ধে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দারিদ্র্য দূর করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড উইমেন স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারপারসন তানিয়া হক বলেন, ‘প্রায় ১০০ বছর আগে বেগম রোকেয়া মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন। অথচ বর্তমানে সরকার অযৌক্তিকভাবে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করার চিন্তা করছে। আমরা মেয়েদের ক্ষতি করে বহির্বিশ্বে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার কথা ভাবছি। এটা সামগ্রিক রাজনৈতিক খেলার অংশ, যা থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত।’
মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানো হলে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের নাম পরিবর্তন করে ‘বাল্যবিবাহ প্রয়োগ আইন’ রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- আমাদের সময় ডটকমের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাছিমুন আরা হক মিনু প্রমুখ।