Tue. Sep 16th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬:24
শেরপুরের সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসীদের হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের কর্মকান্ডগুলি এখন বিলুপ্তির পথে। দীর্ঘদিন যাবত আদিবাসীরা হস্তশিল্পের ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে নানা জাতের জিনিস তৈরী করে নিজেরা ব্যবহার করত এবং এলাকার চাহিদা মিটাতে যোগান্তকারী অবদান রেখে আসছিল। কিন্তু নানা প্রতিকুলতার কারণে এখন তারা আর তাদের ঐহিত্যবাহী হস্তশিল্পের নানা কারুকার্য্যরে সামগ্রী তৈরী করছে না। আদিবাসীদের হস্ত শিল্পের মাধ্যমে তৈরী হত তাদের হাতের তাঁতের তৈরী নানা ধরণের কাপড়। তাঁতের মাধ্যমে এই সমস্ত কাপড়ে ছিল নানা ধরনের আকর্ষণীয় নকশা করা চোখ জুড়ানো ডিজাইন। তাদের তাঁতের মাধ্যমে তৈরী হতো দীর্ঘস্থায়ী মজবুত ধরণের পরনের কাপড় থেকে শুরু করে তোয়ালে, গামছা, শাড়ী, লুঙ্গি, উড়না, ব্যাগ, আরও নানা ধরণের সৌখিন পোশাক তৈরী করতেন।
সরকারী কিংবা বেসরকারী কোন সহায়তা না পাওয়ায় এসমস্ত আদিবাসীরা তাদের হস্তশিল্পের কাজ এখন প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। যদি সরকারী ভাবে এদের সাহায্য-সহযোগীতা করা যেতো তাহলে হয়তো আদিবাসীদের ঐহিত্যবাহী হস্তশিল্পের নানা আকষর্ণীয় পোশাক তৈরীর প্রাণ আবার ফিরে পেতো। এমস্ত হস্ত শিল্পের আদিবাসীদের ছেলে-মেয়ে পরিবারের সকলে মিলেই এই হস্ত শিল্পে কাজে সম্পৃক্ত ছিল। বর্তমানে এই হস্তশিল্প ও কুটির শিল্প বন্ধ হওয়ায় শেরপুর সীমান্তের বহু আদিবাসীসহ অনেক দরিদ্র লোক বেকার হয়েছে। উল্লেখ্য, কুটির শিল্পের মাধ্যমে হাজার হাজার দরিদ্র আদিবাসী নানা জাতের জিনিস তৈরী করে বাজারে বিক্রি করতো। এতে একদিকে যেমন তাদের কর্মসংস্থানের পথ উন্মূক্ত ছিল অপরদিকে তাদের কুটির শিল্পের নানা কারুকার্য্যরে জিনিসপত্র সাধারণ মানুষের চাহিদা মিটাতো। তাদের কুটির শিল্পের মাধ্যমে বেতের চেয়ার, মোরা, শীতল পাটি, মাছ ধরা পলো, খলই, কুলা, চালুন, সোফাসেট, টি-টেবিল, বই রাখার তাক, শিশু দোলনা, ধারাই, মুইনক্যা, টাল্লা ঘরের আসবাবসহ আরও নানা ধরণের প্রয়োজনীয় বাহারী নকশার জিনিসপত্র তৈরী করতো। তারা কোন পৃষ্ঠ পোষকতা না পাওয়ায় কিংবা সরকারী-বেসরকারী সহায়তা না পাওয়ায় কুটির শিল্পগুলি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রকাশ থাকে যে, অত্র শেরপুর জেলার সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসীদের হস্তশিল্পের ও কুটির শিল্পের তৈরী করা জিনিসপত্র ব্যাপক চাহিদা ছিল। কিন্তু এই সমস্ত হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পগুলি পৃষ্ঠ পোশকতার অভাবেই আজ সমস্ত হস্ত শিল্প ও কুটির শিল্পগুলি বিলুপ্তির দারপ্রান্তে। তাই অত্র সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসী হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের শিল্পীদের দাবী- যদি সরকারী ভাবে তাদেরকে সহায়তা দেওয়া হয়, তাহলে তারা আবারও তাদের ঐহিত্যবাহী নানা বৈচিত্রের সামগ্রী তৈরীতে আবারও মনোযোহী হয়ে উঠবে। এতে একদিকে যেমন বিলুপ্ত শিল্পের প্রাণ ফিরে পাবে, তেমনি বহু বেকার পরিবারের কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত হবে।