শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

20 sep picখােলা বাজার২৪।।বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭:মোঃ রাসেল মিয়া,জেলা প্রতিনিধি : নরসিংদীতে বিআরটিএ অফিস কর্তৃক গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন, ফিটনেস পরীক্ষা, চালক লাইসেন্সসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতিতে গাড়ি চালকেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা। নতুন পদ্ধতিতে হচ্ছে সব গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা। এ পদ্ধতিতে ১৫ মিনিটে একটি গাড়ির ফিটনেস সনদ দেয়া হচ্ছে। নরসিংদী বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিআরটিএ ‘ম্যানুয়াল’ পদ্ধতিতে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে আসছিল। এ পদ্ধতিতে খালি চোখে অনেকটা অনুমাননির্ভর হয়ে একজন মোটরযান পরিদর্শক একটি গাড়ির ফিটনেস সনদ দিয়ে দিতেন। এতে পদ্ধতিগত দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেক ত্রুটিপূর্ণ গাড়িই অনেক সময় ফিটনেস সার্টিফিকেট পেয়ে যেত। এমন প্রেক্ষাপটে ১৯৯৭ সালে ভিআইসি স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে নানা কারণে দীর্ঘ সময় ধরে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। পরে দীর্ঘ বিরতির পর সরকার নতুন করে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার বিষয়টি ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার বিষয়টি ডিজিটালাইজেশন করা হয় এবং বর্তমানে নরসিংদীতে এ পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নেয়া হয়, যাতে ত্র“টি নেই বললেই চলে। নরসিংদী বিআরটিএ’র অফিসে মোটরযানের ফিটনেস ও পরীক্ষা হচ্ছে ডিজিটালি। নরসিংদী বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরো জানান, ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল। আর সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করার মূলে রয়েছে মোটরযানের ফিটনেস প্রদান প্রক্রিয়ায় অনিয়ম থাকা। গাড়ি না দেখেই ফিটনেস সনদ দেয়ার অগণিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ এক পর্যায়ে গাড়ির ছবি তুলে রাখার বাধ্যবাধকতা চালু করে। তবে এতেও ফিটনেসবিহীন গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়া বন্ধ করা যায়নি। বর্তমানে নতুন পদ্ধতিতে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করার পর থেকে ফিটনেস সনদ প্রদানে স্বচ্ছতা পাওয়া যাচ্ছে।
২০ সেপ্টেম্বর বুধবার নরসিংদী বিআরটিএ’র অফিস ঘুরে দেখা গেছে, ফিটনেস পরীক্ষায় আসা গাড়িগুলোকে একের পর এক সেন্টারে ঢোকানো হচ্ছে। আর এ পদ্ধতিতে কম্পিউটার মনিটরে প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার তথ্য ভেসে উঠছে। এতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা, গাড়ির মালিক ও চালক সবাই-ই গাড়ির ত্রুটি বা ফিটনেস দেখে নিতে পারছেন। এভাবে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে একটি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা সম্পন্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে নরসিংদী বিআরটিএ’র কর্মর্তারা জানান, এতদিন পদ্ধতিগত দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনেক ত্রুটিপূর্ণ গাড়িও ফিটনেস সার্টিফিকেট পেয়ে যেত; নতুন পদ্ধতিতে যা অসম্ভব। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস পরীক্ষা হওয়ায় অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে এখন থেকে আর কোনো যান সনদ সংগ্রহ করতে পারবে না। এর ফলে ধীরে ধীরে সড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি উধাও হয়ে যাবে।
নরসিংদীর বর্তমান বিআরটিএ ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামান কামরুল জানান, বর্তমানে ঘণ্টায় ১৫টি গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা যাচ্ছে। আর গাড়ির ফিটনেসের সব তথ্য সবার সামনে প্রদর্শিত হয়। ফলে এখানে কারসাজি করে কোনো গাড়ির ফিটনেস কেউ নিতে পারবে না। সরেজমিন দেখা গেছে, গাড়ি প্রবেশমাত্রই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গাড়ির জ্বালানি টেস্ট হচ্ছে। জ্বালানি টেস্টে একটি যান সফল হলে করা হচ্ছে স্পিড পরীক্ষা। এ পরীক্ষার ফলও মনিটরে প্রদর্শিত হচ্ছে। এরপর হেডলাইট পরীক্ষা করে একটু সামনে এগিয়ে হচ্ছে গাড়ির ব্যালেন্স চেক পরীক্ষা। এভাবে ৫ থেকে ৬টি টেস্ট সম্পন্ন হওয়ার পর মনিটরে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষার ফল দেখা যায়। সব ধাপে উত্তীর্ণ গাড়িগুলোকেই দেয়া হচ্ছে ফিটনেস সার্টিফিকেট।