শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭: রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতায় মিয়ানমারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি চুক্তি থেকে পিছিয়ে গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই চুক্তি করতে মিয়ানমার সফরে যাওয়ার কথা ছিল সংশ্লিষ্ট কমিটির। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কমিটির সেই সফর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
কবে নাগাদ আবার প্রতিনিধিদল মিয়ানমার যাবে তা নিশ্চিত নয়। ফলে মিয়ানমারে ইইউয়ের বিনিয়োগ সংক্রান্ত এ চুক্তিটি এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘ইনভেস্টমেন্ট প্রটেকশন এগ্রিমেন্ট’ (আইপিএ) বা চুক্তি স্বাক্ষর অজ্ঞাত সময় পর্যন্ত স্থগিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ চুক্তি স্বাক্ষর করতে মিয়ানমার যাওয়ার কথা ছিল ইইউ প্রতিনিধি দলের। কিন্তু ১৪ সেপ্টেম্বর কমিটি অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অব দ্য ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ঘোষণা করে, তারা মিয়ানমার সফর স্থগিত করেছে। এই সফরের মাধ্যমে ইইউ-মিয়ানমারের মধ্যে বিনিয়োগসংক্রান্ত চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই অবস্থান পরিবর্তন মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা।
এ-সংক্রান্ত ইইউয়ের কমিটির চেয়ার হলেন বার্নড ল্যাঙ্গ। তিনি বলেছেন, পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত প্রতিনিধিদলের সফর স্থগিত থাকবে। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক ও মানবাধিকার বিষয়ক পরিস্থিতিতে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট (ইপি) ১৪ সেপ্টেম্বর একটি রেজলুশন অনুমোদন করেছে। ইইউ-মিয়ানমারের মধ্যে কার্যকর বিনিয়োগ চুক্তি অনুমোদন করে না ওই রেজলুশন। তাই অজ্ঞাত সময় পর্যন্ত প্রতিনিধিদল মিয়ানমারে পাঠানো স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইপির ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিটি।
তিনি আরো বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমারের সাথে বিনিয়োগ বিষয়ক একটি চুক্তি করা সম্ভব নয়। ১৪ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের বিষয়ে, বিশেষ করে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিতে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ওই রেজলুশন অনুমোদন করে। মিয়ানমারের ভেতরে অবস্থানরত ইউরোপীয় ব্যবসায় সম্প্রদায়ের এক সূত্র বলেছেন, মিয়ানমারে এসব পরিস্থিতি বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির কারণে প্রতিনিধিদল তাদের সফর বাতিল করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বড় চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মিয়ানমারের মধ্যে।
এ নিয়ে গত এপ্রিলে ইউরোপীয়ান চেম্বার অব কমার্স ইন মিয়ানমার বলেছিল, তারা দু-এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা চূড়ান্ত করতে চায়। আইপিএ চুক্তির আওতায় ইউরোপীয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য সমান ক্ষেত্র তৈরি হতো বলে আশা করা হয়।