খােলা বাজার২৪। রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭: রাজধানীর ডেমরার ক্যামব্রিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হাসান হত্যা মামলায় বিল্লাল চাপরাশি এবং মো : শাহজাহান নামে দুই রং মিস্ত্রির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আব্দুল্লাহ আল মামুন এরায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিতি ছিলেন।
এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী এবং নিহত হাসানের বাবা মো : আনোয়ার হোসেন। উচ্চ আদালতে এরায় বহাল থাকে এবং তা দ্রুত কার্যকর হয় সেই আশা করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ডেমরার কোণাপাড়ার আল-আমিন রোডে বাবা-মায়ের সাথে বসবাস করত ডেমরার ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো : হাসান। ২০১৪ সালের ১০ জুলাই বিকেলে হাসান বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর সে আর বাসায় ফেরে নি। তার পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে থাকে। হাসানের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এর দুইদিন পর বিকেলে (১২ জুলাই) অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় হাসান তাদের হেফাজতে রয়েছে। ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তারা হাসানকে ছেড়ে দিবে এবং ওই পরিমান টাকা নিয়ে মাওয়া ঘাটে যেতে বলে। আর টাকা না নিয়ে মাওয়া গেলে তারা হাসানকে খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে পরিবারের নিকট পাঠিয়ে দিবে বলে জানায়। ওই ঘটনায় হাসানের বাবা আনোয়ার হোসেন ১৩ জুলাই ডেমরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন।
হাসানের বাবা তার ছেলেকে মুক্তি দিতে তাদের ৫০ হাজার টাকা দেন। তারপরও তারা হাসানকে ছেড়ে দেয়নি। ঘটনার ১২ দিন পর বাড়ির কিছু দূরে বস্তাবন্দি অবস্থায় হাসানকে কয়েক টুকরো করে ফেলে দিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে হাসানের বাবার করা জিডি পরবর্তীতে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর বিল্লাল চাপরাশি এবং মো : শাহজাহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডেমরা থানার এসআই নাসির উদ্দিন। ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে চার্জশিটভূক্ত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনেরই সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।