খােলা বাজার২৪। সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭: স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে চলতি বছরের ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়। দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে ইতোমধ্যেই বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোতে কূটনীতিক তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে গণহত্যার সংজ্ঞা মেনে জাতিসংঘে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত এবং দলিল পাঠানো হচ্ছে।
এ নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতর এবং জেনেভায় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ের সঙ্গেও আলোচনা চলছে ঢাকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদি হত্যা, রোয়ান্ডা ও ক্যাম্বোডিয়ার মতো হাতেগোনা কয়েকটি ঘটনাকে জাতিসংঘ গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
কূটনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করায় আন্তর্জাতিক গুরুত্ব পাবে। বিশ্বের আরো নির্যাতিত জনগোষ্ঠী আমাদের সঙ্গে একাত্ম হবে এতে করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথ অনেকটা সহজ হবে।
পররাষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থার সহযোগিতা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। জাতিসংঘের সদর দফতর এবং তাদের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয়ে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছেন মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা। ইন্ট্যারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের সহযোগিতাও নিতে পারে ঢাকা।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চ লাইট অভিযানে প্রায় ৫০ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়। ২৫শে মার্চের পর থেকে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মুক্তিকামি বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, মিশনগুলোতে গণহত্যাবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়েছে। গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা এখনও চলমান। দূতাবাসগুলোতে পাঠানো হয়েছে নির্দেশনা। কূটনীতিকরা সেখানে যখনই কোন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলবেন তখন যেন গণহত্যার বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেন। দিবসটির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে আমরা আশাবাদি।
ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান ডা. এম এ হাসানের মতে, বাংলাদেশে পাঁচ হাজার বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেলেও এর মধ্যে এক হাজার বধ্যভূমি চিহ্নিত করা হয়েছে৷ সেসব বধ্যভূমি থেকে হাড়গোড় উত্তোলন করা হয়েছে। গণহত্যা প্রমাণের জন্য ফরেনসিক প্রমানের কাজ চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক এবং অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেনের মতে, বাংলাদেশের জন্ম গণহত্যার মতো একটি ভয়াবহ ঘটনার মধ্য দিয়ে। পাকিস্তান এবং তাদের দোসরদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এই গণহত্যার বৈশ্বিক স্বীকৃতি দরকার।