শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার,৮ জানুয়ারি, ২০১৮:নরসিংদী প্রতিনিদি : রাসেল মিয়া: নরসিংদী জেলায় বাংলাদেশ তাঁতশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট শুধু প্রকৃত তাঁতি ও তাঁতি-পরিবারের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে এর বাইরের ব্যক্তিদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ বাবদ কোনো র্অথ খরচ হওয়ার কথা নয়, কিন্তু প্রশিক্ষর্ণাথীদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা করে আদায় করছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষকেরা।

বাংলাদেশ তাঁত র্বোড সূত্রে জানা গেছে, তাঁতশিল্পের স¤প্রসারণ ও উন্নয়নে ১৯৮১ সালে নরসিংদী সদর উপজেলার সাহেপ্রতাপ স্থানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রায় ছয় একর জমিতে গড়ে ওঠে বাংলাদশে তাঁত শিক্ষা ও প্িরশক্ষণ ইনস্টিটিউট। প্রশিক্ষর্ণাথীদের থাকা-খাওয়ার জন্য এখানে রয়েছে ছেলেদের একটি চারতলা ও মেয়েদের একটি একতলাবিশিষ্ট হোস্টেল। রয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট বিশাল প্রশিক্ষণ ভবন। তাঁত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ, প্রশিক্ষক, কর্মর্কতা ও কর্মচারীদের জন্য রয়েছে আবাসিক ভবন।

প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ইনস্টিটিউটে বুনন ও বাজারজাতকরণ, সুতা রংকরণ, জ্যার্কাড ডিজাইন, সেমি-অটোমেটিক তাঁতে বয়ন, টাই ও ডায়িং, স্ক্রনি প্রিন্টিং, ব্লক ও বাটিক প্রিন্টিং এবং ব্যয় নিরসন ও বাজারজাতকরণ বিষেয় দুই মাস করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিবার প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে আটটি বিষয়ে মোট ১৬০ জন প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পান। প্রশিক্ষণ বাবদ কোনো অর্থ জমা দিতে হয় না।

উল্টো প্রশিক্ষর্ণাথীদের ক্লাসপ্রতি ৬০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। আর এ প্রশিক্ষণ নিতে হলে প্রার্থীদের তাঁতি ও তাঁদের পরিবারের সদস্য প্রমাণের জন্য স্থানীয় তাঁতি সমিতি ও জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সনদ নিতে হয়। এ জন্য টাকার বিনিময়ে ভুয়া সনদ নিচ্ছেন তাঁতি নন, এমন পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ব্লক ও বাটিকের প্রশিক্ষর্ণাথী সুমি আক্তার, পিংকি আক্তার, জায়েদা বেগম, সীমা সুলতানাসহ অনেকেই সংবাদ কর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্রের প্রশ্নরে জবাবে জানান, তাঁরা তাঁতি-পরিবারের সদস্য নন।

কথা প্রসঙ্গে বুনন ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে আসা নরসিংদী সরকারি কলেজের ইসলামি ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম র্বষের ছাত্র জাকির হোসেন বলেন, ‘শুনেছি, এখানে বিভিন্ন র্কোসে কাজ শেখানো হয়, আবার টাকাও দেওয়া হয়। তাই বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের তাঁত সমিতির সভাপতি শাজাহানের কাছ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় তাঁতি-পরিবারের ভুয়া সনদ নিয়েছে। অথচ এ সনদের জন্য তাঁত বোর্ডের নির্ধারিত ১২০ টাকা খরচ হওয়ার কথা। আবার ইনস্টিটিউটে কিছু টাকা দিয়ে ভর্তি হই।’ এ ব্যাপারে তাঁতি নেতা শাজাহান টাকা নিয়ে সনদ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। বুনন ও বাজারজাতকরণ বিভাগের প্রশিক্ষণার্থী রেহেনা আক্তার বলেন, ‘বুননের কাজ শিখতে এখানে এক হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হয়েছি।

কিন্তু এখন শুনছি, তাঁত বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি হতে কোনো টাকা লাগে না; বরং জনপ্রতি ৬০ টাকা হারে সম্মানি দেওয়া হয়।’ এসব ব্যাপারে তাঁত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউিটের জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম ও মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, তারা সবাই তাঁতি-পরিবারের সদস্য। কাগজে-কলমে এমনটাই আছে। তারা প্রকৃত তাঁতি-পরিবারের সদস্য কি না, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করা আমাদের আওতায় পড়ে না।’ যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী তাঁত প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মো. মতিয়ার রহমান দাবি করেন, প্রকৃত তাঁতি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ বাবদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।