খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: দেশের ছয় হাজার কিলোমিটার মহাসড়কে রোড মার্কিং ও সাইন স্থাপন এবং কিছু করিডোর উন্নয়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কাছে এক হাজার ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা চেয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর-সওজ। প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠালে তাতে আপত্তি জানায়। পরে প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিরীক্ষণে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। কমিটির অন্যান্য সদস্য হলেন- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (অপারেশন) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস, সওজের রোড সেফটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহীন সরকার, বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব আলম তালুকদার এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সহকারী প্রধান (পরিকল্পনা) দীপজন মিত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর-সওজ এর অধীনে সারা দেশে মহাসড়ক রয়েছে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার। এর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক তিন হাজার ৮২৭ কিলোমিটার এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক চার হাজার ২৪৭ কিলোমিটার। আট হাজার কিলোমিটারের মধ্যে দুই হাজার কিলোমিটার মহাসড়কে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান থাকায় বাকি ছয় হাজার কিলোমিটার সড়কে রোড সাইন ও মার্কিং স্থাপন করা হবে।
একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু সড়কের করিডোর উন্নয়ন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় সারা দেশে ৬৭টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানের সড়ক করিডোর উন্নয়নে নির্মাণকাজ পরিচালনা ও আট বছর রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অথচ জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের মোট ছয় হাজার কিলোমিটার স্থানে রোড সাইন ও মার্কিংসহ ঝুঁকিপূর্ণ করিডোর উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
তাই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই প্রকল্পের আওতাধীন জনবল ও প্রযুক্তিগত বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে প্রস্তাবিত ব্যয় অনেক বেশি মনে হওয়ায় মন্ত্রণালয় এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে এবং প্রকল্পটির ব্যয় পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি করে। ওই কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এ ব্যাপারে সওজের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান বলেন, সড়ক-মহাসড়কে রোডসাইন ও মার্কিং একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে এটি সাধারণত নতুন সড়ক নির্মাণ বা বিদ্যমান সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকে। অন্যদিকে আট হাজার কিলোমিটার সড়কের মধ্যে দুই হাজার কিলোমিটারে এখন এ ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। তাই প্রকল্পটির আওতায় অবশিষ্ট ছয় হাজার কিলোমিটার মহাসড়কে রোড সাইন ও মার্কিংয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বেশকিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্পট উন্নয়নও এ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সওজের রোড সেফটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহীন সরকার জানান, ওই প্রকল্পটি শুধু রোড সাইন ও করিডোরের নয়। এর সঙ্গে মেইন্টেনেন্সও রয়েছে। পাঁচ সদস্যের কমিটি মিলে মেইন্টেনেন্স খরচ বাদ দেয়ার প্রস্তাব করেছি। এতে প্রকল্পের ব্যয় এক হাজার ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা থেকে নেমে ৫০০ কোটিরও নিচে চলে এসেছে। তিনি বলেন, ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের সীমাবদ্ধতা ছিল। আমরা ওই সময়ের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষ করলেও চিঠি আকারে এখনো মন্ত্রণালয়ে যায়নি সিদ্ধান্ত। ওটা গেলে মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। মানবজমিন