Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলাবাজার২৪ শনিবার ২১ জুলাই, ২০১৮ :  ৫৮. এমন কোনো জনপদ নেই, যা আমি কিয়ামতের দিনের আগে ধ্বংস করব না অথবা যাকে কঠোর শাস্তি দেব না। এটা তো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৫৮)

তাফসির : আগের আয়াতে বলা হয়েছিল, কিছু মানুষ অন্য মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করে। অথচ যাদের শরিক করা হয় তাদের কেউ কেউ আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তৎপর। পাশাপাশি তারা আল্লাহর রহমতের আশা করে ও তাঁর আজাবকে ভয় করে। এ ধরনের শিরক করার দরুন মুশরিকদের ওপর আল্লাহর আজাব অবধারিত হয়ে যায়। কিন্তু তার পরও তাদের ওপর দ্রুত আজাব আসে না। আলোচ্য আয়াতে এর কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, মহান আল্লাহ বিশেষ হেকমতে দ্রুত আজাব দেন না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের ওপর আজাব আসবে না। বরং আল্লাহর চিরন্তন নীতি হলো, কোনো জাতির চিরন্তন স্থায়িত্ব নেই। প্রতিটি জনপদের হয় স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, নয়তো আল্লাহর আজাবে ধ্বংস হতে হয়।

পৃথিবীতে মানুষের জীবন সীমিত। একদিন এই পৃথিবীই ধ্বংস হবে। পৃথিবীর কোনো স্থানই ধ্বংসলীলা থেকে রক্ষা পাবে না। কিন্তু কোনো কোনো অঞ্চলে পাপাচার ও জুলুম ব্যাপক হয়ে গেলে কিয়ামতের আগেই আল্লাহর আজাব নাজিল হবে। ফলে সেসব জনপদ কিয়ামতের আগেই ধ্বংস হবে। হয়তো তারা নিহত হবে অথবা কঠিন বিপদের সম্মুখীন হবে। এটা তাদের ওপর অবিচার নয়, বরং এটা তাদের পাপের ফলস্বরূপ হবে। কেননা মহান আল্লাহ কারো ওপর জুলুম করেন না। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাদের (ধ্বংসপ্রাপ্ত জনপদের অধিবাসীদের) ওপর জুলুম করিনি। তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর জুলুম করেছে…।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১০১)

পাপাচারের দরুন কোনো জনপদ ধ্বংস করে দেওয়া কিংবা নির্দিষ্ট সময়ে ওই জনপদের নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার কথা লাওহে মাহফুজ তথা সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ আছে। এটা আল্লাহর চূড়ান্ত বিধান।

শিরক, কুফর, অব্যাহত অবাধ্যতা, পাপাচার, অনাচারের কারণে পাপীদের ওপর আল্লাহর আজাব আসার কথা। কিন্তু দয়ালু আল্লাহর নীতি হলো, দুনিয়ায় তিনি শিগগিরই কাউকে পাকড়াও করেন না। তিনি অপরাধীদের সাময়িক অবকাশ দেন। সৎপথে আসার সুযোগ দেন। তার পরও যারা নিজেদের শুধরে নেয় না, তিনি তাদের অত্যন্ত কঠিনভাবে পাকড়াও করেন। তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়াও অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে যায়। এটাই আল্লাহর নীতি। এটাই চিরন্তন সত্য। আবার এই অবকাশ এ জন্যও হতে পারে, যাতে অপরাধীদের অপরাধ নির্দিষ্ট সীমায় পৌঁছে যায়। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘কাফিররা যেন কিছুতেই মনে না করে যে আমি অবকাশ দিই তাদের মঙ্গলের জন্য; আমি তাদের অবকাশ দিই যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়। তাদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি রয়েছে।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৭৮)

গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ