শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

খোলাবাজার২৪. বুধবার ১৫ আগস্ট ,২০১৮ঃ দুর্নীতি দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং মানুষের মুক্তির প্রধান অন্তরায় বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা এ মন্তব্য করেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি এবং আইন ও বিধি-বিধান না মানা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য কিংবা রাস্তার মূল সমস্যা হচ্ছে আইন না মানা। আর এই না মানাই দুর্নীতি। মানুষের মুক্তির প্রধান অন্তরায়। যদি দুর্নীতি দমন বা প্রতিরোধ করা যায় তবেই শিক্ষাসহ সকল প্রকারে সরকারি সেবা মানুষ হয়রানিমুক্তভাবেই পেত। আজকের জাতীয় শোক দিবেসে শপথ গ্রহণ করি, আমরা সবাই আইন মানবো এবং আইন না মানার এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে সচেষ্ট হবো। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে একই সূতায় গেঁথে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাত্রে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা  জানিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, আজ জাতীয় শোক দিবস যেমন সত্য, তেমনি আজকের দিনটি লজ্জার এবং কলঙ্কেরও দিন। কারণ আমি এমন একটি দেশের নাগরিক যে দেশের মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু জীবনের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন, সেই দেশেরই কতিপয় দুর্বৃত্ত তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এমনকি এ কলঙ্ক ভবিষ্যতে হাজার বছর পরের প্রজন্মকেও বহন করতে হতে পারে।

তিনি বলেন, তবে এই লজ্জা বা কলঙ্ক কিঞ্চিত পরিমাণ হলেও লাঘব করতে পারি যদি বঙ্গবন্ধুর সেই অমিয় বাণী ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ অর্থাৎ মুক্তি তথা দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও অর্থনৈতিক মুক্তির যে সংগ্রাম তিনি শুরু করেছিলেন সেই সংগ্রামে নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করতে পারি।

ইকবার মাহমুদ বলেন, আমাকে আশার আলো দেখায় নতুন প্রজন্মের শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীর উজ্জল মুখ, যারা আমাদের ব্যর্থতা দেখিয়ে দেয়। এই প্রজন্মই সত্যিকারার্থে জাতির পিতা আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে। এরাই জাতির পিতার স্বপ্নের অর্থনৈতিক, সামাজিক বৈষম্য মুক্তির সংগ্রামকে আদর্শ হিসেবে লালন করে, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ করবে।

তিনি বলেন, বিআরটিএ যদি দুর্নীতিমুক্ত হতো তাহলে কীভাবে রঙচটা, হেডলাইটবিহীন গাড়ি, ফিটনেস সার্টিফিকেট পায়? আমরা বিআরটিএর কার্যক্রম দেখছি, বর্তমানে কৌশলগত কারণেই হস্তক্ষেপ করছি না। তারা যদি বেআইনি কিছু করে, জনস্বার্থেই কমিশন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টি গুরুত্ব দিবে।

তিনি আরো বলেন, যে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবো সেই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত রাখবো। তবেই আজকের এই কলঙ্ক দিবস, লজ্জার দিবস, শোক দিবস স্বার্থক হবে, তা না হলে এই আলোচন সভা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না। আলোচনার আলো সমুজ্জল রাখতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে আলোচনায় যা বলি তার বাস্তব রূপ দিতে হবে।

দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে ইকবাল মাহমুদ বলেন, রাস্তায় যখন বের হবেন তখন দুদকের পরিচয় ব্যবহার করবেন না। সাধারণ মানুষের মতো আচরণ করবেন। অসাধারণ হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমাদের বাচ্চারা দুদকের লোগো লাগানো একটি গাড়ি আটকিয়েছে এমন সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমরা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। কাউকেই আমরা ছাড় দেইনি এবং ভবিষ্যতেও ছাড় দেব না।

শোকসভায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম, মহাপরিচালক মোহাম্মদ জয়নুল বারী, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন, উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী প্রমুখ। সভা শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাত্রে জাতির পিতার পরিবারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।