বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার ২৪,বৃহস্পতিবার,০৮ নভেম্বর ২০১৮ঃ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘তাঁর চিকিৎসার জন্য আদালতের নির্দেশনা ও মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশকে লঙ্ঘন করে সরকার দেশনেত্রীকে আজ হাসপাতাল থেকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। তাঁর চিকিৎসা শুরুই হয়নি, কেবল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, আর সেই মূহূর্তে দেশনেত্রীকে কারাগারে প্রেরণ করার উদ্যোগ শুধু মনুষ্যত্বহীন কাজই নয়, এটি সরকারের ভয়ঙ্কর চক্রান্ত।’

বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার ডাক্তার ও তাঁর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য সৈয়দ আতিকুল হকের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন, ডাক্তার আতিক বেগম জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছুটির ছাড়পত্র দেননি এবং মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ডাক্তার জলিলুর রহমান বর্তমানে দেশের বাইরে, এমতাবস্থায় সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেগম জিয়ার ছাড়পত্র দিতে বাধ্য করতে চাপ সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ বেগম জিয়ার জীবনকে বিপন্ন করার অথবা শারীরিকভাবে চিরতরে পঙ্গু করার চক্রান্ত সরকারের কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকার।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া সুস্থ হোক, এটি বিদ্বেষপ্রবণ সরকার কখনো চায় না। বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে লাগামছাড়া ক্রোধে এই অবৈধ শাসকগোষ্ঠী এখন তাঁর জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এটি শেখ হাসিনার হিংস্র আচরণেরই চরম বহিঃপ্রকাশ। অহংকার, উন্মত্ততা, হিংসা ও দখলকৃত ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নির্লজ্জ লড়াই চালাতেই বিচার বুদ্ধি হারিয়ে সরকার বেগম জিয়ার জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকারের সৌজন্যবোধ ও হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে বলেই দেশের বিপুল জনপ্রিয় নেত্রী বেগম জিয়ার ওপর চালানো হচ্ছে অমানবিক নিপীড়ন।’

রিজভী বলেন, ‘সরকারের পাতানো পথে বিরোধী দলকে নির্বাচন করতে বাধ্য করানোর জন্যই সরকার দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে নিয়ে নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। তাঁর চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারকেও কেড়ে নিয়েছে সরকার। চিকিৎসা শেষ না করেই পিজি হাসপাতাল থেকে দেশনেত্রীকে কারাগারে প্রেরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

এসয় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘দেশনেত্রীর চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএসএমএমইউ-তে ভর্তি রাখতে হবে, অন্যত্থায় জনগণ আর বসে থাকবে না, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিপর্যস্ত করার যেকোনো ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে এবারে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে হলেও প্রতিরোধ করবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাথে সংলাপকালে কথা দিয়েছিলেন-নতুন মামলা দেয়া হবে না, গ্রেফতার করা হবে না এবং প্রকৃত রাজবন্দিদের মুক্তির ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের কোনো প্রমাণ মেলেনি।’

‘গতকালের সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমিও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত তিন দিন ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের চিরুনী অভিযান চালিয়ে ছেঁকে ধরা হয়েছে, তার জন্য।’

এসময় বিএনপির এই মুখপাত্র প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘সংলাপ কি তাহলে চূড়ান্ত আক্রমণের পূর্বে কিছুটা সময়ক্ষেপণ? তা না হলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করার অঙ্গীকার করার পরও এতো তাণ্ডব, এতো পাইকারী গ্রেফতার! সরকার কি তাহলে প্রতারণা ফাঁদ তৈরি করেছে? প্রধানমন্ত্রী অতিতের মতো বলেন একটা, কিন্তু কাজ করেন অন্যটা।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।