Mon. Apr 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,সোমবার,১৯ নভেম্বর ২০১৮ঃভারতের নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ কাল মঙ্গলবার চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলে বাংলাদেশি হিন্দুদের বাদ দেয়া হতে পারে। কারণ যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) বেশিরভাগ সদস্যই এমনই সুপারিশের পক্ষে। আর এটা হলে বাংলাদেশি হিন্দুরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন না। টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অসমিয়া সংবাদমাধ্যম টাইমএইট এ তথ্য জানিয়েছে।

জেপিসির একজন সদস্যের উদ্ধৃতি দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। তবে বাংলাদেশি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়া আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি বড় ইস্যু।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আসলে দেখতে হবে ২০ নভেম্বরের বৈঠকে খসড়া বিলটিকে কীভাবে নেয়া হয়। বৈঠকের পরই খসড়াটি চূড়ান্ত করে পার্লামেন্টের আসছে শীতকালীন অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে।

ওই সদস্য অবশ্য এ-ও বলেন, ‘বিলটি যদি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয় তাহলে একদিনও টিকবে না। কারণ ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদানের পথে এটি সংবিধানের লঙ্ঘন।’

জেপিসির সদস্য ভুবনেশ্বর কলিতা বরাত দিয়ে অসমিয়া সংবাদমাধ্যম টাইমএইট জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের বাদ দিয়ে শুধু পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দুদেরই নাগরিকত্ব দেয়ার সুপারিশ করা হতে পারে।

তবে বৈঠক থেকে যে সিদ্ধান্তই আসুক না কেন বিলের প্রস্তাবনা যে সংশোধিত হচ্ছে তা নিশ্চিত করেছেন ওই সদস্য।

টাইমএইট বলছে, বৈঠকের আগে সদস্যদের বক্তব্য লিখিতভাবে পেশ করতে আহ্বান জানিয়েছেন জেপিসির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র আগ্রাওয়াল।

এদিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দিল্লিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আসামের ৭০টি সংগঠন।

তাদের দাবি, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পাস হলে অন্তত ১ কোটি ৯০ লাখ বাংলাদেশি হিন্দু আসামে চলে আসবে। এ কারণে অসমিয়ারা হারাবেন নিজেদের ভিটেমাটি।

প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব বিলে প্রধানত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা ‘ধর্মীয় কারণে’ নির্যাতিত হয়ে যারা এদেশে কমপক্ষে সাত বছর ধরে আশ্রয় নিয়ে আছেন তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

আগে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হলে অন্তত বারো বছর ভারতে সাধারণ বসবাসকারী হিসেবে থাকতে হতো। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সেই সময়কাল কমিয়ে এনে সাত বছর করা হয়েছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার এক নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এদেশে ঢোকা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈনরা নাগরিকত্ব পাবেন।

প্রস্তাবিত ওই আইন কার্যকর হলে ওই সমস্ত দেশে বসবাসকারী ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পার্সি যারা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও শিখদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতের পার্লামেন্টে একটি বিল আনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার।

বিলটিকে ঘিরে আসামের রাজনীতি বেশ উত্তপ্ত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পাশাপাশি চলছে উগ্রপন্থীদের হুমকি-ধামকি রয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ বাঙালি হিন্দু খুনও হয়েছেন।