বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ঃ ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নয় আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন একটি কাজে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ চিরদিনের জন্য জনগনের মন থেকে দূরে গেছে। পরাজয় আমাদের হয়নি পরাজয় হয়েছে আওয়ামী লীগের, নৈতিক ভাবে তাদের পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগ সেই দল যারা শুধু ক্ষমতায় থাকতে চায় ছাড়তে চায়। সংবিধান এবং রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা তারা ব্যবহার করছে নিজেদের স্বার্থে।’

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে সুপ্রীমকোর্ট বার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে আলোতে উঠে আসতে হবে। এজন্য যুবকদের এগিয়ে আসতেহবে। এই দেশটা আপনাদের, আপনাদেরই রক্ষা করতে হব। জিয়াউর রহমান আমাদের শিখিয়েছেন সামনের দিকে এগিয়ে জেতে হবে। পরাজিত হওয়া যাবে না। পরাজিত বোধ করলেই পরাজিত।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের যেসব ভাইয়েরা পঙ্গু, ক্ষতিগ্রস্ত, কারারুদ্ধ তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। যেসব ভাইয়েরা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের পাশে দাড়াতে হবে। আজকে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, আমাদের নেত্রী, গণতন্ত্রের মাতাকে কারাগার থেকে বের করে আনতে হবে। সেজন্য আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমগ্র দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্বার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে আনতে হবে। আমাদের ভাইদের মুক্ত করতে হবে, এবং আমাদের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। এই শপথ নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’

ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হলো সেই দল যারা যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রকে তারা ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনে। রাষ্ট্রকে তারা ধংস করে দেয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ওপর তাদের রাগটা ওই জায়গায়, তিনি দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন। কথা বলার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। সেজন্য জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অপপ্রচার চালান। তাতে কোনো কাজ হবে না। মানুষের হৃদয় থেকে তাকে মুছে ফেলা যাবে না।’

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদেরকে ঘুরে দাড়াতে হলে পুনর্গঠন করতে হবে। যারা প্রার্থী ছিলেন নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের মামলা থেকে পরিত্রাণ করা ও জেল থেকে মুক্ত করাতে হবে। যেসব এলাকায় আমাদের প্রার্থী ছিল না, সেখানের দলের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করতে হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে পূর্নগঠন করতে হবে। নির্বাচনে পরিক্ষীতদের সামনে আনতে হবে ‘

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের এলাকাছাড়া করে দিয়েছে। কিভাবে নির্বাচন করবো। এখন আমাদের দুটি কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো পুনর্বাসন আর অপরটি পূর্নগঠন। এখন ক্ষতিগ্রহস্ত হাজার হাজার লাখ লাখ নেতাকর্মীকে পুনর্বাসন করতে হবে। আর দলের ত্যাগিদের সামনে এনে দলকে পুনর্গঠন করতে হবে। নতুন করে দলকে পুর্নগঠন করতে হবে। যারা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করেছে তাদের সামনে এনে পুনর্গঠন করতে হবে। দরকার হলে আমরা সামনে থেকে সরে যাব। তারপরও দলকে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পুর্নগঠন করতে হবে।’

গত ৩০ ডিসেম্বর একটি নীল নকশার ওপরে ভিত্তি করে নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটাকে কখনই নির্বাচন বলা  যায় না। এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের মনে রাখতে হবে। এটা কখনই আমাদের সংবিধান সম্মত নির্বাচন হয়নি। আজকে ৯৭ শতাংশ আসন মহাজোট পেয়েছে। আপনারা যদি নিউইয়র্ক টাইমস পড়েন, ওয়াশিংটন পোস্ট পড়েন, গার্ডিয়ান পড়েন, লন্ডনের অবজারভার পড়েন, সারা দুনিয়ার কেউ বিশ্বাস করে না, সুষ্ঠূ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। এটা ভোট চুরির নির্বাচন হয়েছে, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফল ঘটেনি।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে  প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের যৌথ পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- দলটির স্থায়ী কমিটির কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, আব্দুল মান্নান, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর( বীর বিক্রম), ডা:এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান।

উপস্থিত ছিলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।