শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

৩০ ডিসেম্বরকে ‘ভুলে যাবো’, এবছরই পুনর্নির্বাচন দিন: সরকারকে ড.কামাল

খােলাবাজার ২৪,বুধবার, ২৭মার্চ ২০১৯ঃগণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘যা হওয়ার হয়েছে। আমরা ৩০ ডিসেম্বরের প্রহসনকে ভুলে যেতে চাই। আর সেজন্য এ বছরের মধ্যেই প্রকৃতপক্ষে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। আমরা অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে চাই না। দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন, তাতেই মঙ্গল হবে জাতির।’

বুধবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩য় তলায় আবদুস সালাম হলে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাই দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে। আমরা ৩০ ডিসেম্বরকে ভুলে যেতে চাই, এ নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। চাই না কোনও হিংসা, সংঘাত-হানাহানি।’

সুষ্ঠু রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনতে এ বছরের মধ্যেই নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের কয়েক মাস হয়েছে। এখন আর দেরি করে লাভ নেই। তাড়াতাড়ি একটা প্রকৃতঅর্থে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করা হোক।’

ড. কামাল বলেন, ‘আমরা সংঘাত ও সংঘর্ষ চাই না। এতে দেশের অর্থনৈতিক শাসন ব্যবস্থা ও দেশের অনেক ক্ষতি হয়। কাল্পনিকভাবে নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা প্রতারণার শামিল। এটা শুধু জনগণের সঙ্গেই প্রতারণা নয় বরং স্বাধীনতার শহীদদের সঙ্গেও প্রতারণা। নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা নেয়ার জবাব জনগণ আদায় করবেই।’

তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর যা হল তা শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি। তাদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। কারণ তারাতো জীবন দিয়েছেন এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য।’

এই সংবিধান প্রণেতা আরও বলেন, ‘জনগণ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে আর তারাই দেশ চালাবে- এমনটাইতো শহীদের আশা ছিল। কিন্তু এ সরকার শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে ৩০ ডিসেম্বরে যা করা হল তা-তো নজিরবিহীন প্রতারণা। এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কি আছে?’

তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর কে ভোট দিয়েছেন আমি তাকে খুঁজছি।’ এসময় তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনগণের কাছে জানতে চান- তারা ওইদিন ভোট দিয়েছেন কি-না? তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরে ভোটদানকারী ভাগ্যবান ব্যক্তিটিকে আমি খুঁজে বেরাচ্ছি, কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না।’

সরকারের উদ্দেশ্যে ড. কামাল বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে অপমান করবেন না। দেশের জনগণ ক্ষমতার মালিক। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। সংবিধানে এই কথা উল্লেখ রয়েছে। আর এই সংবিধানে এক নম্বর স্বাক্ষর হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ দেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। অনেকে ভয়ে মুখ খুলছেন না। গুম, হত্যা ও অপহরণের ভয় চারিদিকে। দেশ আজ মহাসংকটের শিকার।’

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইয়্যেদ, রেজা কিবরিয়া, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট আলতাফ হোসেন, মহসিন রশীদ, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, অধ্যাপিকা বিলকিস বানু, মোশতাক আহমেদ, আজমেরী বেগম ছন্দা, মোহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, খান সিদ্দিকুর রহমান ও কাজী হাবিব প্রমুখ।