তাই সকালটা যদি আমরা ফুরফুরে মুডে শুরু করতে পারি তবে গোটা দিনটাই ভালো যাবে- আশা করা যায়। অনেক সময় দেখা যায় সকালে ঘুম থেকে উঠতেই কোনো এক ঠুনকো কারণে মন মেজাজ বিগড়ে যায়। এই প্রভাবটা তখন সারা দিনের কাজে ভেসে ওঠে। কাজ তো ঠিকভাবে হয়ই না, বরং কর্মক্ষেত্রেও অনিচ্ছাকৃতভাবেই সহকর্মীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে অনেকেই।
মানুষ অভ্যাসের দাস। কথাটি অনেকাংশেই সত্যি। প্রতিদিনের অভ্যাসের আপনার জীবন গড়ে দিতে পারে- আপনি যেভাবে চান। একটা ভলো দিনের জন্য সকালে ঘুম থেকে ওঠা জরুরি। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারলে সারা দিন কাজে যেমন মনসংযোগ করা যায়, তেমনি মেজাজও থাকে সফট।
কথায় বলে, সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা মানে সকাল সকাল ঘুমাতে যাওয়া। অনিয়মিতভাবে সকালে ওঠার চেয়ে এটি নিয়মের মধ্যে ফেলতে পারলে সবচেয়ে সুবিধা। এতে ঘুম ভালো হয়। প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও অভ্যাস হয়ে গেলে দেহঘড়ি ঘুমের নতুন সময় ও সকালে ওঠার বিষয়টি মানিয়ে নেবে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন বিছানায় চোখ কচলাতে কচলাতে টিভি দেখা শুরু করেন। টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেই তাদের সকাল শুরু হয়। টেলিভিশনের নানা খবরাখবর আপনার মনকে অস্থির করে তুলতে পারে। সকালবেলায় এটি মোটেই কাম্য নয়। অনেকেই হয়তো রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিগ্ধ ধারার সুরে শুরু করেন সকাল।
অনলাইন দুনিয়ায় কারও কারও কাগজের পত্রিকা পড়ারও অভ্যেস আছে। তাদের অনেকেই দেখা যায়, হয়তো সকালে বিছানায় শুয়ে থেকে মোবাইল অন করে বিভিন্ন অনলাইন দৈনিকগুলোর সংবাদ শিরোনাম দেখছেন। কেউ কেউ হয়তো চায়ের কাপে চুমু খেয়ে কাগজের পত্রিকা হাতে সকালটা শুরু করেন।
শারীরিক ও মানসিকভাবে কর্মোদ্যেম পেতে সকালে সব ধরনের ভাবনা-চিন্তা ছাড়া বারান্দায়, ছাদে কিংবা বাড়ির কাছের খোলা জায়গায় ৫-১০ মিনিট সময় কাটান হেঁটে বেড়িয়ে। সকালের স্নিগ্ধ আলো উপভোগ করুন। সকালের আলো প্রাকৃতিকভাবে আপনার মনকে পুরো দিনের জন্য তৈরি করে ফেলতে সক্ষম।
তারপর সোজা চলে যেতে পারেন শাওয়ারের নিচে। সকালে গোসল করার অভ্যাস মনকে সতেজ করে। ঘুমের কারণে অবিন্যস্ত চুল হয় পরিপাটি। ত্বকে আসে নমনীয়তা। গোসলে ত্বক-উপযোগী সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। সকালে গোসলের অভ্যাস কাজের উদ্যম বাড়ায়, শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে, বিষণ্নতা কমায়। তারপর নাশতা সেরে নিন।
সকালে ডায়েট করতে গিয়ে কিংবা সময়ের অভাবে সকালে নাশতা করেন না। কিন্তু আপনার দিনের শুরুটা খারাপ করার জন্য এই সামান্য নাশতা না খাওয়ার ব্যাপারটিই দায়ী। সকালের নাশতা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাবেন না। সঙ্গে হাতে তুলে নিতে পারেন এক কাপ গরম চা। শরীরকে ঝরঝরে ও চাঙা রাখতে এটির কোনো বিকল্প নেই। চা যদি আবার হয় মসলাদার, তাহলে তো কথাই নেই।
এখন প্রকৃতিতে বসন্ত। বসন্তের এই সকালে কোলিল আর কৃষ্ণচূড়ার কোমল প্রকৃতিতে মৃদ্যু হাওয়ায় ভোরের পাতা ঝরার শব্দ মনকে দোলা দিয়ে যায়। মানসিকতাকে করে অমলিন, নির্মলতর। এমন সময়ে আপুনিও ক’দিনের অভ্যেসেই রপ্ত করতে পারেন সুন্দর দিন শুরুর স্বাভাবিক কায়দা-কানুন।