খােলাবাজার ২৪, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৯ঃ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত সহপাঠী কামরুন্নাহার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল এবং বোরকার দোকান পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শুক্রবার দুপুরে পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবালের নেতৃত্বে একটি দল তাকে নিয়ে সোনাগাজী পৌর শহরের মানিক মিয়া প্লাজায় একটি বোরকার দোকানে যায়।
সেখানে দোকান মালিকের সঙ্গে বোরকা কেনার বিষয়ে কথা বলা হয়। পরে পিবিআই দলটি সোনাগাজী মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সেখানে নুসরাতকে কীভাবে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়, তার বর্ণনা দেন কামরুন্নাহার মনি।
নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই’র পরিদর্শক মো. শাহ আলম পরিবর্তন ডটকমকে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, নুসরাত হত্যায় সরাসরি জড়িত মনিকে বুধবার ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার মনিকে নিয়ে মাদ্রাসা ও বোরকার দোকান পরিদর্শন করা হয়েছে।
পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, ‘মনির কাছ থেকে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া পুরুষদের গায়ে থাকা বোরকাগুলোও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
উল্লেখ্য, সোনাগাজীর ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএস সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার মামলায় গত ২৭ মার্চ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গত ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ উঠে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশ সদরদফতরের প্রাথমিক তদন্তে তা প্রমাণিতও হয়।
গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত জাহান মারা যান। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম, শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। বাকি আসামিদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
পিবিআই প্রধান বনোজ কুমার মজুমদার জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত পরোক্ষদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।