বৃহঃ. এপ্রি ১৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,রবিবার,০৭জুলাই,২০১৯ঃ মানুষ খেকো গাছ এর গল্প তো আমরা অনেক শুনেছি, কিন্তু আসলেও কি এমন কোন গাছ আছে? যে গাছ মাংস খেতে পছন্দ করে? আজ আমরা এই ভয়ংকর মানুষখেকো গাছ সম্পর্কে জানবো।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি- মাংস খেকো গাছ পৃথিবীতে আছে। এমনকি আমাদের দেশেই বিখ্যাত জেলা সিলেটেই আছে এই গাছ। সাধারণত এই গাছ মাটিতে তার জন্য পর্যাপ্ত খাবার পায়না ফলে তার খুদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ খেয়ে থাকে। পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাংস খেকো গাছ পাওয়া যায় তার মদ্ধে উল্লেখযোগ্য ভাবে যে প্রজাতির গুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে, কলস, স্ন্যাপ ট্র্যাপ, লবস্টার-পট ট্র্যাপ, ফ্লাইপেপার ট্র্যাপ,  ব্লাডার ট্র্যাপ, ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ ইত্যাদি।

এরা সাধারণত পোকামাকড় ধরার জন্য ফাঁদ পেতে রাখ। যেমন “কলস” নামের যে গাছটি। এই গাছটি দেখতে অনেকটা কলসের মতো তাই এর নাম করন করা হয়েছে কলস। এই কলসের ভেতরে লাল রঙের মধুর মতো এক ধরনের তরল পদার্থ থাকে। আর যেখানে মধু আছে সেখানে পোকা-মাকড় আসবে এটিই স্বাভাবিক। এই কলসির মতো কাঠামোর মধ্যে যখন কোনো পোকা-মাকড় মধু খেতে আসে তখন পা পিছলে এর ভিতরে পরে যায় এবং এটির উপরে একটা ঢাকনা থাকায় পোকা ভিতরে পরা মাত্রই ঢাকনা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে গাছটি পোকাটিকে হজম করে ফেলে।

আজ পর্যন্ত খুজে পাওয়া পৃথিবীতে সেরা মাংস খেকো গাছ সম্ভবত ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ। আমেরিকার সাউথ ও নর্থ ক্যারোলিনায় এই উদ্ভিদগুলো ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। গাছগুলো প্রায় এক ফিটের মতো লম্বা হয় তবে ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপের পাতাগুলো দেখতে অনেকটা মুখের চোয়ালের মতো হয়। গাছের প্রতিটি পাতা তিন থেকে ছয় ইঞ্চির মতো লম্বা হয় এবং এতে অনেক গুলো ছোট ছোট লোম থাকে। যখনি ভুলে কোন পোকামাকড় এই পাতার উপর বসে পরে মুহুর্তের মধ্যে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এই ভেনাস ট্র্যাপের পাতাগুলো খুবই সংবেদনশীল। এই গাছের ক্ষমতা এতো বেশী যে এটি আধ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে তার পাতা বন্ধ করে ফেলতে পারে। ঠিক এই সময় আবার পাতার লোমগুলোও পোকাকে বাইরে বের হতে বাধা দেয় ফলে পোকাটি আর সেখান থেকে বের হতে পারে না। পরবর্তীতে  পাতা থেকে একধরণের বিশেষ রস বের হয়ে পোকাকে হজম করতে শুরু করে। এভাবে একটা পোকা হজম করতে ভেনাস ট্র্যাপের সময় লাগে ১০ দিনের মতো।

ভেনাস ট্র্যাপের পাতা একসাথে ৩ থেকে ৪টি পোকা ধরতে পারে এবং পরবর্তীতে যখন এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় তখন আবার নতুন করে পাতা গজায় এবং পুনরায় সে নতুন পাতা গুলা পোকামাকড় ধরতে থাকে।

উদ্ভিত গুলোর আচরণ ঠিক এমন হওয়ার কারন কি? বিজ্ঞান বলে এই গাছ গুলার বেঁচে থাকার জন্য প্রচুর পরিমানে নাইট্রোজেন প্রয়োজন হয় এবং মাটি থেকে সে যথেষ্ট পরিমানে নাইট্রোজেন না পাবার দরুন সে এমন মাংসাশী প্রানিতে পরিণত হয়েছে। আবার কিছু কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন,  পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার প্রয়জনে বিবর্তনের মাধ্যমে এই সব উদ্ভিদ মাংসাশী প্রানিতে পরিণত হয়েছে। আরও অবাক করা বেপার হলো যে এই উদ্ভিত প্রাই সকল কীটপতঙ্গই খেয়ে থাকে। তবে অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে ইঁদুরই এই মাংসাশী গাছটির কবলে বেশি পড়ে। আবার ইঁদুরই হচ্ছে এই গাছের সবচেয়ে প্রিয় খাবার।

যদিও এই গাছ খুব ভয়ানক ও রোমাঞ্চকর, কিন্তু মানুষের তেমন কোন ক্ষতি করার খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আজ যখন ইঁদুর ধরে খাচ্ছে, ভবিষ্যতে হয়ত এই গাছ মানুষের মাংসেও নজর দিতে পারে! তাই সাবধান! ভালো থাকুন সবাই।