শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,সোমবার,০৭অক্টোবর,২০১৯ঃ প্রথমবার যমজ সন্তান পেয়ে খুব খুশিই হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপর টানা চার বার যমজ সন্তানের জন্ম দেন মারিয়ম। ততদিনে অবশ্য কিশোরী থেকে যুবতী হয়ে গিয়েছেন তিনি। আর সেই সঙ্গে বুঝে গেছেন, কোথাও একটা বড় ধরণের সমস্যা রয়েছে।
এদিকে, অভাবের সংসারে সদস্য সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় অনটন আর অশান্তিও ক্রমশ বেড়ে চলে। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান মারিয়ম। চিকিৎসক তাকে জানিয়ে দেন, তার ডিম্বাশয়ের আকার বেশ বড় এবং তিনি নিজেও অত্যন্ত ফার্টাইল। কিন্তু কোনও রকম গর্ভনিয়ন্ত্রক ওষুধ বা অস্ত্রপচার তার ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী হতে পারে।

গোটা বিষয়টি নিয়ে মারিয়ম তার স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেন, তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মরিয়মের কথায় কান দেননি তার স্বামী। ফলে এর পর চার বার একসঙ্গে তিন সন্তান ও পাঁচ বার এক সঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম।সব মিলিয়ে মোট ৪৪ সন্তানের জন্ম দেন মরিয়ম, যাদের মধ্যে ৩৮ জন বেঁচে রয়েছে। বর্তমানে মরিয়মের বয়স ৩৯ বছর। আড়াই বছর আগে অন্য নারীকে বিয়ে করে তাকে পরিত্যগ করেছেন মরিয়মের স্বামী। আর বিগত আড়াই বছর ধরে ৩৮ সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব একাই সামলাচ্ছেন স্বামী পরিত্যক্তা ‘সিঙ্গল মাদার’ মরিয়ম নবট্যানজি।

আফ্রিকার উগান্ডার বাসিন্দা তিনি। উগান্ডার কামপালার উত্তরে ৫০ কিলোমিটার দূরে একটা ছোট গ্রামে ৩৮ সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন মরিয়ম। স্বামী বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর মরিয়মের দাদি এখানে তার থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ছেলে মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মরিয়ম। নানা উপায়ে সংসার চালান তিনি। অনটনের সংসার, তাই মাছ, মাংস সেভাবে খাওয়া হয় না বললেই চলে। তবে প্রতিদিন ২৫ কেজি ভুট্টা লাগে মারিয়মের সংসারে।

মারিয়মের প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানরা উপার্জনের চেষ্টার পাশাপাশি ঘরের কাজেও মাকে সাহায্য করে। কে কোন দিন কোন কাজটা করবে, তা একটা রুটিনের মতো বানিয়ে ঘরের দেওয়ালের একপাশে টাঙিয়ে দিয়েছেন মরিয়ম। শারীরিক সমস্যা, সমাজ ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে মারিয়মের একক মাতৃত্বের লড়াই আজও অব্যহত।