শুক্র. মার্চ ২৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
r-torcure-cell
খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার,০৫নভেম্বর,২০১৯ঃ রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পেয়েছে। ক্যাম্পাসের একটি ভবনের ১১১৯ নম্বর রুমের ভেতর থেকে লোহার রড, পাত ও পাইপ উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৩ নভেম্বর) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (পিআইডব্লিউ) এসএম ফেরদৌস আলমকে।

ফেরদৌস আলম জানান, রোববার বিকেলে তিনিসহ কমিটির সদস্যরা রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পৌঁছে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনাস্থলের সিসি টিভির ফুটেজ দেখেন।

এদিকে, এ ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি শেখ গোলাম মোস্তফা জানান। এরা হলেন- মেহেদী হাসান আশিক, মেহেদী হাসান হিরা, নজরুল ইসলাম ও নবিউল উৎস। এ নিয়ে এ মামলায় নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি শেখ গোলাম মোস্তফা জানান, শনিবার রাতে এ ঘটনায় ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে। সেখান থেকে সিসি টিভি ফুটেজ দেখে আরো পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রোববার রাতে আরো চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার ওই রাতেই চন্দ্রিমা থানায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অধ্যক্ষ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার বিভাগের অষ্টম পর্বের ছাত্র কামাল হোসেন সৌরভ, ইলেকট্রনিক্সের পঞ্চম পর্বের মুরাদ, পাওয়ারের সাবেক ছাত্র শান্ত, ইলেক্ট্র্যিালের সাবেক ছাত্র বনি, মেকাট্রনিক্সের সাবেক ছাত্র হাসিবুল ইসলাম শান্ত, ইলেকট্র মেডিকেলের সাবেক ছাত্র সালমান টনি, এই বিভাগের সপ্তম পর্বের ছাত্র হাসিবুল এবং কম্পিউটারের সাবেক ছাত্র মারুফ। বাকি আসামিরা অজ্ঞাত।

এদিকে অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদকে লাঞ্ছনার পর রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কলেজ জুড়ে ক্ষোভ। মুখ খুলতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। নানা অভিযোগ উঠে এসেছে শিক্ষকদের কাছ থেকে।

জানা গেছে, ২০১১ সালে ঘোষণা করা হয় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের কমিটি। পরে ২০১৪ সালে কমিটিতে যুগ্ম সম্পাদকের পদে ঠাঁই পান কামাল হোসেন সৌরভ । শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কমিটি ঘোষণার আগ থেকেই চলতো তার অত্যাচার। শুধু সৌরভ নয় ছাত্রলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে নির্যাতনের অভিযোগ। সবচে বেশি র‌্যাগিংয়ের শিকার হতেন নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা। ক্ষিপ্ত হলে কখনো কখনো ‘টর্চার সেলে’ চলতো অমানুষিক নির্যাতন।

এদিকে, সৌরভ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন ছাত্রীরাও। তারা বলছেন, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানি করা হতো। প্রতিনিয়ত এমন অপকর্ম চললেও নির্যাতনের ভয়ে অভিযোগ দিতেন না ভুক্তভোগীরা।

২০১৫ সালে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি।