শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার,১৪নভেম্বর,২০১৯ঃ দয়ালু বা সহানুভূতিশীল বেশি হলে মানুষের আয়ু বাড়ে! লসঅ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার বেদারি কাইন্ডনেস ইনস্টিটিউট সম্প্রতি এমনই তথ্য দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য এ নিয়ে অনেকের করা হাসি-ঠাট্টার জবাব দিতে শতভাগ তৈরি বলেও জানিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড্যানিয়েল ফেসলার বলছিলেন, আমরা বিষয়টির বৈজ্ঞানিক দিকটি দেখতে চাই। আমরা এর মনস্তত্ত্ব, শরীরবিদ্যা এবং ইতিবাচক সামাজিক মিথস্ক্রিয়া নিয়ে কাজ করছি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দয়া, সহানুভূতি কিংবা সহমর্মিতার মত বিষয়গুলো নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছে।

গত মাসে প্রবীন ডেমোক্রেট এলিজা কামিংসের মৃত্যুর পর সেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দেয়া ভাষণে এই বিষয়টিই ছিল প্রধান বিষয়।

তিনি সেখানে বলেছিলেন, শক্ত মানসিকতার বা শক্তিশালী মানুষ হবার জন্য দয়ালু হতে হয়।

জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক এলেন ডিজেনেরাসও কিছুদিন আগে জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বে’র বিষয়ে বলেছিলেন, দয়ালু হওয়া মানে নিজের মতের সঙ্গে যার মিলবে, তার প্রতি দয়ালু হওয়া নয়। দয়ালু মানে সবার প্রতি দয়া বা সহানুভূতিশীল হওয়া।

এবারে আসুন, বিশ্ব দয়া বা সহানুভূতি দিবসে দেখে নেয়া যাক, আসলে দয়ালু হবার মানে কী? আর কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?

বিশেষজ্ঞরা এটা বিশ্লেষণ করে দেখছেন এবং তাদের মতে এটি মানুষের জীবন-মৃত্যুর মতো জরুরী। মিঃ ফেসলারের গবেষণার বিষয় হলো, কিভাবে দয়া ও সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে মানুষকে আরো দয়ালু ও সহানুভূতিশীল হতে উৎসাহিত করা যায়।

বলা যায়, আমরা এখন নির্দয় একটা সময়ে বাস করি। যুক্তরাষ্ট্রে এবং পুরো বিশ্বে ব্যক্তি পর্যায়ে এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে ক্রমাগত সংঘাত বাড়ছে।

তার মতে, দয়ামায়ার বিষয়টি মূলত একটি ভাবনা, একটি অনুভূতি এবং একটি বিশ্বাস, যা মূলত অপরের ভালোর সঙ্গে সম্পর্কিত। আর নির্দয় হওয়া মানে অসহিষ্ণু মতবাদ, অপরের ভালো সম্পর্কে উদাসীন।

সামাজিক মাধ্যমে ট্রলের শিকার হয়েছেন এমন যে কেউ বিষয়টি সহজেই বুঝতে পারবেন।

মিঃ ফেসলার মনে করেন মানুষ এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রাসী আচরণ করে, অন্যের মতামতের মূল্য কম দেয়।

কাইন্ডনেস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য বেদারি ফাউন্ডেশন দুই কোটি মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। যেকোন ব্যক্তিকে সাহায্য করা এবং এ কাজের জন্য নতুন নেতা তৈরি করাই এই ইনস্টিটিউটের প্রধান উদ্দেশ্য।

আর সে কাজে বিজ্ঞান আর আধ্যাত্মিকতার সম্মিলন ঘটনোর চেষ্টা করছেন গবেষকেরা।

সামাজিক বিজ্ঞানীরা দেখছেন, যারা সাধারণত নির্দয় ব্যবহার করেন, তার পেছনের কারণ কী? অন্যদিকে মনোবিদরা দেখছেন, কিভাবে দয়ালু মনোভাব মানুষের মুড ভালো করে এবং বিষন্নতার লক্ষণ দূর করতে পারে।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক কেলি হার্ডিং তার নতুন বই ‘দ্য র‍্যাবিট এফেক্ট’- এ দেখেছেন, দয়ালু হবার মাধ্যমে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং সর্বোপরি মানুষকে দীর্ঘায়ু করে।

১৯৭০ সালে খরগোসের ওপর চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, একদল দয়ালু গবেষকের অধীনে কাজ করেছে এমন খরগোসরা গবেষণায় ঠিকঠাক অংশ নিচ্ছে।

চিকিৎসক মি হার্ডিন মনে করেন, দয়ালু হবার মাধ্যমে মানুষ অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।

  • দয়ালু জীবনের জন্য কিছু টিপস

১. পাশের মানুষটির কথা মন দিয়ে শুনুন

২. কর্কশ আচরণের জবাব দয়ালু মনোভাব দিয়ে দিন

৩. যাদের মতামতের গুরুত্ব সাধারণত কেউ দেয়না, তাদের পাশে থাকুন। এর মাধ্যমে আপনি তাদের মূল্যায়ণ করে সম্মান দিলেন, যা তাকে ভালো করতে সাহায্য করবে

৪. নির্দয় আচরণ পেলে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাবেন না, ভাবার চেষ্টা করুণ এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে।