শুক্র. এপ্রি ১৯, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, বৃহস্পতিবার ০৮ অক্টোবর,২০২০: সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে জাতিসংঘের বিবৃতি একটি বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সিলেটের এম সি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীর শ্লীলতাহানিসহ দেশব্যাপী নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন আর সহিংসতার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তিনি স্বীকার করেছেন, এর দায় তাঁরা এড়াতে পারেন না, পারবেন না। পারবেন কোত্থেকে? কারণ, আপনারা যে সরকার তৈরি করেছেন, সেই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। আপনারা গায়ের জোরে বন্দুক-পিস্তল দিয়ে, আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে বাংলাদেশের মানুষের নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছেন।’

বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) যে সংবিধান তৈরি করেছে, সেখানে তিনটি অনুচ্ছেদ নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হবে। আজ স্কুলের ছাত্রী-গৃহবধূ যারা সরকারের ব্যাপারে সামান্য অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ফেসবুকের মাধ্যমে, তাদের আপনারা ধরে নিয়ে কারাগারে দিচ্ছেন।’

বেগমগঞ্জে নারীর শ্লীলতাহানির কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা এক দিনের নয়, মাসখানেক আগে এই কাজ করা হয়েছে। অথচ সরকারের পুলিশ বাহিনী তা জানে না।’

দেশে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই দাবি করে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনকে আপনারা আপনাদের অন্যায় কাজে ব্যবহার করেছেন। ভোট চুরি-ডাকাতি করেছেন, সেখানে তাদের ব্যবহার করেছেন। মানুষ এখন আর আওয়ামী লীগকে ভয় পায় না, ভয় পায় পুলিশকে। কারণ, পুলিশ বলে—আওয়ামী লীগ কে? নেত্রী কে? বানিয়েছি তো আমরা!’

অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই আন্দোলন শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকবে না, এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। এই দেশের মানুষ কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। কখনো একনায়ক স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদী সরকারকে মেনে নেয়নি। এটা দীর্ঘকালের ইতিহাস। তরুণরা গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছে, একাত্তরে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে। আবারও তারা রক্ত দেবে।’

বর্তমানে দেশে এক মহাসংকট চলছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সংকট দেশের মানুষের অস্তিত্বের সংকট, মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়ার সংকট। আমরা দীর্ঘদিন সেই স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করেছিলাম। আজ আবারও আমাদের সেই লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হব। পরাজিত হবে স্বৈরাচার।’

অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘পদত্যাগ করুন, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় কোনো দিকে পালানোর পথ পাবেন না।’

নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।