খােলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার ২২, অক্টোবর ২০২০: ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এই প্রথম নাসার মহাকাশযান কোনো গ্রহাণুতে অবতরণ করেছে। তাদের মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’ ধূলিকণা সংগ্রহে অবতরণ করেছে গ্রহাণু ‘বেন্নু’তে। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে বেন্নুতে প্রথম পদার্পণ করে নাসার মহাকাশযান। নাসার এক বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে।
নাসার মহাকাশযানটি যে গ্রহাণুতে নেমেছে সেটি পৃথিবী থেকে ২০ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত। মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে রয়েছে যে গ্রহাণুপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’), এই গ্রহাণুর ঠিকানা সেখানেই। খবরে বলা হয়েছে, ১৬ সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য নেমে গ্রহাণুর ওপরের অংশ থেকে মাটি, নুড়ি, পাথর সংগ্রহ করেছে নাসার মহাকাশযান। কি পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করেছে সেটি জানতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। দেখা হবে আবারও নামানোর প্রয়োজন রয়েছে কি না। যদি নমুনা গ্রহণ সফল হয় এবং সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে ওসিরিস-রেক্স ২০২৩ সালে পৃথিবীতে ফিরবে।
কোনো গ্রহাণুতে মহাকাশযানের অবতরণ অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ গ্রহাণুদের ভূপৃষ্ঠ এতটাই অমসৃণ যে সেখানে অবতরণ করতে গেলেই বিপদ ঘটতে পারে। কোনো গ্রহ বা উপগ্রহে যেভাবে কোনো ল্যান্ডার নামানো হয় সেভাবে গ্রহাণুতে নামানো হয় না। এমনকি চার বছর আগে যেভাবে প্রথম ল্যান্ডার নামানো হয়েছিল ধূমকেতু ‘৬৭/পি শুরুমোভ-গেরাশিমেঙ্কো’তে, এবার বেন্নুতে অবতরণ ঠিক সেভাবে হয়নি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য পা ছুঁইয়েই বেন্নু থেকে নমুনা আনা হয়েছে। এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাচ অ্যান্ড গো’ (সংক্ষেপে ‘টিএজি’ বা ‘ট্যাগ’)। উদ্দেশ্য ছিল ৬০ গ্রাম নমুনা সংগ্রহ করা।
এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত নাসার টিম জানিয়েছে, তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী অবতরণ সম্ভব হয়েছে এবং গ্রহাণু বেন্নু থেকে উড্ডয়ন করেছে মহাকাশ যানটি। অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ বিজ্ঞানী দান্তে লরেত্তা বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, এটা সম্ভব হয়েছে বিশ্বাস করতে পারছি না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কাজ হয়েছে এই মহাকাশ যান দিয়ে। করোনা মহামারির কারণে নাসার এই প্রকল্পের কাজ দুই মাস বিলম্বিত হয়েছে।
জাপানের হায়াবুসা২ মিশন অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্র এই মিশন পরিচালনা করেছে নাসা। জাপানের মহাকাশ যানটি ৪৫০ কোটি বছরের পুরোনো গ্রহাণু রিয়িগু থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে এবং ডিসেম্বরে পৃথিবীতে ফিরবে। আগামী দুই বছরে আরো তিনটি গ্রহাণু মিশন পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে নাসার।