বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪,সোমবার,১৫ র্মাচ ২০২১ঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে অনন্য রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটদের অবদান অসাধারণ হিসেবে পরিগণিত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ক্যাডেটদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সততা, বিচক্ষণতা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। তাই মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটগণ দেশের বাইরে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই বাংলাদেশের একজন অ্যাম্বাসেডর। যেখানেই থাকুক না কেন তাদের সততা, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মত উজ্জ্বল অবস্থা সৃষ্টি করবে।”

সোমবার (১৫ মার্চ) চট্টগ্রামের মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে একাডেমির ৩৯তম ও ৪০তম ব্যাচ ক্যাডেটদের গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি ও মোঃ তৌফিকুল আরিফ, যুগ্মসচিব মাহবুবা পান্না, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ওয়াসিম মকসুদসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, সরকারি শিপিং দপ্তরসহ অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত মেরিন ফিশারিজ একাডেমির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা সহানুভূতি ও আন্তরিকতা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এসময় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী চান এ একাডেমি উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাক। এ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক ক্যাডেট এবং শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সকলে স্বতন্ত্র অবস্থানে পৌঁছে যাক। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। এজন্য একাডেমির ক্যাডেটদের উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোর্সের সীমা বৃদ্ধি করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করার সুযোগ তৈরির জন্য বিভিন্ন ভাষায় ক্যাডেটদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। জাতির পিতা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে যারা শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, ও জ্ঞান নিয়ে যাচ্ছেন তারা দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করবেন, এটা প্রত্যাশিত।”

এসময় তিনি আরো যোগ করেন, “এ বছর একাডেমির ৩৯তম ও ৪০তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৬৩ জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৬৬ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ৩৬ জন ক্যাডেট পাসড আউট হচ্ছে। এদের মধ্যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৬ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ৪ জন মহিলা ক্যাডেট রয়েছে। নারী শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনার একটি ধাপ হিসেবে এ একাডেমিতে মহিলা ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে এবং এ পর্যন্ত ৪৮ জন মহিলা ক্যাডেট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। নারীর ক্ষমতায়নের এ সুযোগ শেখ হাসিনা করে দিয়েছেন। অদূর ভবিষ্যতে এ একাডেমিতে আরো বেশি মহিলা ক্যাডেট আসবে বলে প্রত্যাশা করি। তারা দক্ষতা ও কৃতিত্বের সাথে কোর্স সম্পন্ন করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে এবং দেশে ও দেশের বাইরে নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।”

এ একাডেমির ৪৮১ জন ক্যাডেটের অনুকূলে নৌপরিবহন অধিদপ্তর Continuous Discharge Certificate  (CDC) ইস্যু করায় এ ক্যাডেটরা বাণিজ্যিক জাহাজে চাকুরীতে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন বলেও এসময় মন্ত্রী জানান।

গ্র্যাজুয়েশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “আপনার অনৈতিকতা, মূল্যবোধহীনতা ও অসততা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধ্বংস করে দেবে। অপরদিকে আপনার কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা, আন্তরিকতা ও শিক্ষার প্রসার ঘটাতে পারলে বিশ্বের বুকে আপনিই হবেন বাংলাদেশ। আপনিই হবেন আমাদের লাল সবুজের পতাকা। আপনিই হবেন ত্রিশ লক্ষ শহিদ আর দুই লক্ষ সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কারিগর। বাংলাদেশের  সংবিধান, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আপনাদের সবটুকু পবিত্র আনুগত্য ও দায়িত্বশীলতা থাকতে হবে। প্রয়োজনবোধে নিজের জীবন উৎসর্গ করে দেশমাতৃকার ভাবমূর্তি রক্ষা করা যেন আপনাদের ব্রত হয় । আমরা যেন বলতে পারি দেশের সোনালী সন্তান আপনারা। বিশ্ব পরিমন্ডলে আপনাদের বিকশিত করার জন্য সরকার সবকিছু করবে।”

সুনীল অর্থনীতিতে আমাদের অপার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের আর কোন দেশ বিনা যুদ্ধে সেরা কূটনীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। যেটা করতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আলোকবর্তিকা হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিকশিত বাংলাদেশ দেখতে চান। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চান। সোনার বাংলা দেখতে চান। সে বাংলাদেশের এক বিশাল অংশের দায়িত্ব মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটদের কাঁধে আজ থেকে আমরা অর্পণ করলাম।”

এর আগে প্রধান অতিথি প্যারেড পরিদর্শন করেন ও সেরা ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন। পরে সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দেন তিনি।