শনি. এপ্রি ২০, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার২৪, বৃহস্পতিবার ,২৫ র্মাচ ২০২১ঃ প্রশাসনের গাফিলতি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের প্রচ্ছন্ন মদদে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে ন্যক্কারজনক হামলা ঘটেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।গত ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার প্রেক্ষিতে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ২০ মার্চ ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করে। প্রতিনিধি দলের প্রধান নিতাই রায় চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

নিতাই রায় বলেন, শাল্লার হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির-উপাসনালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে আমরা গত ২০ মার্চ শাল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম সরেজমিনে পরিদর্শন করি। এ সময় সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, শাল্লা ও দিরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ওই দিন সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের বাড়িঘরে, উপাসনালয়ে অবর্ণনীয় ধ্বংসলীলা দেখা যায়।  ক্ষতিগ্রস্তরা ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় বলেছেন, ঘটনার দিন মাইকে প্রচার করে স্থানীয় যুবলীগ নেতা স্বাধীন মিয়ার নেতৃত্বে তার অনুসারী শত শত মানুষ ওই গ্রামে উপস্থিত হয়ে প্রায় ৬০/৭০টি বাড়ি-ঘরের সমস্ত মালামাল ও আসবাবপত্র লুটপাট করতে থাকে, বাড়ি-ঘরের জানালা, দরজা, বেড়া কুপিয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে, নারী পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে। শিশু বাচ্চাদের নিয়ে বাথরুমে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে থাকা নারীদের বের করে এনে লাঞ্ছিত করে।

নিতাই রায় আরও বলেন, শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র দাশ ঘটনার বর্ণনা করেন। বর্তমান চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুলের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়। তিনি হামলার ভয়াবহতা আমাদের কাছে তুলে ধরেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শনকালে নারী-পুরুষ সবাই হামলার বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি অশোক তালুকদার, রমাকান্ত দাস পিন্টু, সদস্য গনেন্দ্র চন্দ্র দাশ, বানুজয় দাশ প্রমুখ কথা বলেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে হিমাংশু দাস, শিপ্রা রাণী, লক্ষ্মী, মিনতিসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য আমরা লিপিবদ্ধ করি।

নিতাই রায় বলেন, আমাদের দেশ আবহমানকাল ধরেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কিন্তু যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, বাড়ি দখল, জমি দখল ও লুণ্ঠন শুরু হয়। ইতোপূর্বে রামু, নাসিরনগর, পাবনার হেমায়েতপুর, নাটোরের বড়াইগ্রাম, ফরিদপুর, ভোলা, মাগুরাসহ সারাদেশে এ ধরনের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। কোনো ঘটনারই বিচার হয়নি।

বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, আমরা সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ন্যক্কারজনক নির্মম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঘটনায় জড়িত সবার গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করছি। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, মন্দির, উপাসনালয় পুনঃনির্মাণ ও পুনর্বাসনে সরকারকে সর্বাত্মকভাবে এগিয়ে আসার এবং ওই এলাকাসহ হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত অন্যান্য এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ঘটনার প্রেক্ষিতে যে মামলা হয়েছে তার অপব্যবহার যেন না হয় এবং নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানি করা না হয়, প্রশাসনকে সেদিকে দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।