বৃহঃ. মার্চ ২৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার২৪, শুক্রবার , ০৯ ডিসেম্বর, ২০২২: শনিবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ঢাকার অন্যতম প্রবেশপথ আব্দুল্লাহপুরে তল্লাশি ছাড়া কোনো দূরপাল্লার বাস ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। এছাড়া মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও পথচারীদেরও তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা। গাড়ির নাম ও চালকের মোবাইল নাম্বার খাতায় লিখে তারপর তা ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে

আজ শুক্রবার সকাল থেকে আব্দুল্লাহপুর মোড় ট্রাফিক বক্সের কাছে বসানো এ চেকপোস্টে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।

সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই চেকপোস্টে অন্তত ১৫টি বাস থামাতে দেখা যায় পুলিশকে। এ সময় তারা বাসের ভেতরে গিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি মালামাল তল্লাশি করেন।

মোটরসাইকেল চালক আলাউদ্দিন বেপারি জানান, গাজীপুর স্টেশন রোড থেকে ব্যক্তিগত কাজে ফার্মগেট আসছিলেন তিনি। পথে আব্দুল্লাহপুর চেকপোস্টে থামিয়ে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। ব্যাগের ভেতরে থাকা প্রতিটি জিনিস বের করে দেখেন পুলিশ সদস্যরা। তিনি বলেন, ‘এতে তাদের (পুলিশের) তাদের ৪-৫ মিনিট সময় লেগেছে। আগেও চেকপোস্টে তল্লাশি করেছে কিন্তু গাড়ির নাম্বার ও মোবাইল নাম্বার রাখার বিষয়টি এবারই নতুন মনে হলো।’

জামালপুর থেকে ঢাকাগামী রাজিব পরিবহনের হেলপার আলামিন হোসেন জানান, তাদের বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এরপর চালকের নাম্বার ও গাড়ির নাম্বার নোট করে নেয় তারা।

আলামিন বলেন, ‘এই কোম্পানির ২০টি বাসের মধ্যে সকাল ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ৪টি বাস ছেড়েছে। যাত্রী কম থাকার পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যও বাস কমানো হয়েছে।’

কিশোরগঞ্জ কটিয়াদি থেকে ঢাকার মহাখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস জলসিড়ি পরিবহনের চালক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বাসে তল্লাশির সময় অনেক যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। একসঙ্গে এত পুলিশ সদস্যকে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে যান অনেকে।’

আব্দুল্লাহপুরে পুলিশের এই চেকেপোস্টের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (অপরাধ) বদরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। মানুষকে হয়রানি করা নয়, বরং তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ।’

  • বাস নেমেছেও কম

ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে আলি নূর পরিবহনের ২ শতাধিক বাসের মধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে চলছে ৫০টি। আরও ৫০টি বাস পুলিশ রিকুইজিশন করেছে। বাকি বাসগুলো ‘নিরাপত্তাজনিত’ কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানায় মালিকপক্ষ।

এই রুটে চলাচলকারী বাসের চালক ও সহকারীদের ভাষ্য, কেবল নির্বাচন ছাড়া একসঙ্গে এতগুলো করে বাস রিকুইজিশন করতে দেখা যায়নি আগে।

আলি নূর পরিবহনের একটি বাসের সহকারী আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, ‘শুক্রবারে সাধারণত দূরপাল্লার যাত্রী বেশি থাকে। কিন্তু আগামীকাল বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের জন্য মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছে না।’

জাকির ট্রাভেলস ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির কর্মী মিনহাজ ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে তাদের কোম্পানির বাস চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পঞ্চগড় রুটে। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবারও অনেক যাত্রীর চাপ ছিল কাউন্টারে। আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র একটি বাস এসেছে।’

উত্তরবঙ্গ স্পেশাল পরিবহণের কাউন্টার কর্মী দিদার হোসেন বলেন, ‘ভোর থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত একটি গাড়িও কাউন্টারে আসেনি। আমাদের কোম্পানির বাসও রিকুইজিশন করেছে পুলিশ।’

জাফর হোসেন নামের এক যাত্রীর ভাষ্য, ‘একসঙ্গে এত পুলিশের উপস্থিতি ও তোড়জোড় দেখে মনে হচ্ছে কাল নির্বাচন। কারণ নির্বাচন ছাড়া নিরাপত্তার এত কড়াকড়ি তো তেমন দেখা যায় না।’